সুস্থ, স্বাভাবিক সন্তান জন্মের জন্য গর্ভধারণকালে মাকে অবশ্যই চার বা তার বেশিবার এবং সন্তান জšে§র পর চারবার চিকিৎসকের কাজে যেতে হবে। তবে এ দুটোরই হার এখনও অনেক কম। গর্ভধারণকালে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন মা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পান।
স্বল্পশিক্ষিত মায়েদের সন্তানরা আরও বেশি অসহায়। তাদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ কম। এসব শিশুই বেশি জীবনবিনাশী রোগে আক্রান্ত হয়।
শহরের বস্তির মায়েদেরও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ কম। কারণ এসব নারীর অধিকাংশই কম মজুরিতে কাজ করেন, যা দিয়ে মৌলিক প্রয়োজন মেটানোই কঠিন। শহরের বস্তিগুলোতে নবজাতক ও মায়ের স্বাস্থ্যসেবার চ্যালেঞ্জগুলো তীব্র। কারণ নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা সম্পর্কে তাদের জ্ঞান সীমিত এবং এ ধরনের চর্চাও তারা তেমন একটা করে না। এসব প্রতিবন্ধকতা নিয়েই নতুন বৈশ্বিক টার্গেটের মুখোমুখি তারা। ২০৩০ সাল নাগাদ নবজাতকের মৃত্যুহার প্রতি হাজার জীবিত জšে§ অন্তত ১২তে নামিয়ে আনতে হবে। এ হার ২০ জন।
নবজাতকের জীবন রক্ষায় দরকার আরও কার্যকর ও সার্বক্ষণিক অত্যাবশ্যক স্বাস্থ্যসেবা, আরও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী এবং উল্লেখযোগ্য হারে জনগণের সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এছাড়া ভৌগোলিক, লৈঙ্গিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে আরও বৃহত্তর আঙ্গিকে কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজন।
অশিক্ষিত মায়েদের সন্তানদেরই মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। মৃত নবজাতকদের মায়েদের সম্পর্কে খবর নিলে দেখা যায়, মাধ্যমিক বা তার বেশি লেখাপড়া করা মায়েদের তুলনায় অশিক্ষিত মায়েদের সংখ্যা দ্বিগুণ এসব মৃত্যুর ৮৮ শতাংশই প্রতিরোধ করা যায়।
ইউনিসেফ মনে করে নবজাতকের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতিটি শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে ইউনিসেফ ‘নিউবর্ন বান্ডল’ সরবরাহের প্রতি নজর দিচ্ছে, যেখানে চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকছে। লোকবল অর্থাৎ মা ও নবজাতকের সেবার জন্য উপযুক্ত দক্ষতাসম্পন্ন স্বাস্থ্যকর্মীকে যে কোনো সময় পাওয়ার ব্যবস্থা। স্থান, অর্থাৎ সন্তান প্রসবের স্থাপনা হতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ। প্রডাক্ট, অর্থাৎ নবজাতকদের জন্য জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সামগ্রী সম্পন্ন স্পেশাল কেয়ার ইউনিট।
ক্ষমতা, অর্থাৎ নবজাতক ও মায়ের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন কমিউনিটি। গর্ভকালীন, সন্তান প্রসবের সময় এবং সন্তান জšে§র প্রথম সপ্তাহে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হলে তা প্রতিরোধযোগ্য নবজাতকের মৃত্যু ও গর্ভে শিশুর মৃত্যু রোধে বড় ভূমিকা রাখে। কম ওজনের ও আকারে ছোট এবং অসুস্থ নবজাতকের জন্য বিশেষ সেবার ব্যবস্থাও জীবন রক্ষার জন্য খুবই প্রয়োজন। ইউনিসেফের কার্যক্রম এমনভাবে সাজানো হয় যেন সেগুলো উচ্চ মাত্রায় কার্যকর, সাশ্রয়ী, সহজে বিস্তারযোগ্য এবং সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের সেবা নিশ্চিত করে।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে