নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের শেয়ার লেনদেন এক মাসের ব্যবধানে অনেকটা পিছিয়ে গেছে। তবে প্রকৌশল খাতের শেয়ার লেনদেন এগিয়ে রয়েছে। বস্ত্র খাতের শেয়ারে আগ্রহের ভাটা এবং প্রকৌশলে বিনিয়োগকারীদের টানের কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যমতে, বাজারে মোট লেনদেনের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি। গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ১০ শতাংশ ছিল এ খাতের দখলে। সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার খাতটির দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৮ কোটি টাকা। তবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাতের অবস্থান। গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের মধ্যে ২৩ শতাংশই ছিল প্রকৌশল খাতের দখলে। খাতটির দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা। আর লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকিং এবং তৃতীয় অবস্থানে ওষুধ ও রসায়ন খাত।
এক মাস আগে গত ২০ জুলাই মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ ছিল বস্ত্র খাতের। পাশাপাশি অবস্থান ছিল প্রকৌশল খাতও। অর্থাৎ যৌথভাবে বস্ত্র ও প্রকৌশল খাত লেনদেনে প্রথম অবস্থানে ছিল। আর লেনদেনের ১৩ শতাংশ অংশগ্রহণের মাধ্যমে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল জ্বালানি এবং ১২ শতাংশ অংশগ্রহণে তৃতীয় অবস্থানে ব্যাংকিং খাত। আলোচিত সময়ে বস্ত্র খাতের দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ১৫১ কোটি টাকা এবং প্রকৌশল খাতের ১৪৯ কোটি টাকা। মাঝে বেশ কয়েকবার ব্যাংকিং খাত প্রথম অবস্থানে থাকলেও ফের শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে প্রকৌশল খাতের লেনদেন।
এদিকে পিই রেশিওর দিক দিয়ে ব্যাংকিং খাতের পিই রেশিও ৯ দশমিক আট পয়েন্টে এবং প্রকৌশল খাতের পিই রেশিও ২৬ দশমিক পাঁচ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া বস্ত্র খাতের পিই রেশিও ২৪ দশমিক শূন্য পয়েন্টে এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯ দশমিক দুই পয়েন্টে অবস্থান করছে। এক মাস আগে ব্যাংকিং খাতের পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক এক পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের পিই রেশিও ছিল ২৫ দশমিক ৫ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ২৩ দশমিক দুই পয়েন্টে এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের পিই রেশিও ১৯ দশমিক তিন পয়েন্টে অবস্থান করেছিল।
বাজারবিশ্লেষকরা বলছেন, পিই রেশিওর দিক দিয়েও ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগনির্ভর পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে বেশ কিছুদিন দর বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা কিছুটা মুনাফা তুলে নেওয়ায় এ খাতের শেয়ারে লেনদেনে হার কমেছে।
তারা বলছেন, আসলে বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা হুজুগে বিনিয়োগ করেন। তারা মৌলভিত্তি শেয়ারে বিনিয়োগ কম করেন। স্বল্প সময়ে বেশি মুনাফা করতে চান বিনিয়োগকারীরা। আর এ কারণে মাঝেমধ্যে তারা বিনিয়োগ কৌশল পরিবর্তন করেন। যখন যে খাতে আগ্রহ বাড়ে, সেসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেনের হার বাড়ে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর জুনে হিসাববছর শেষ হবে। সে হিসেবে এসব কোম্পানির লভ্যাংশের মৌসুম আসছে। তাই আগের চেয়ে এসব কোম্পানির শেয়ারদর বেশি। এসব কোম্পানির শেয়ারে আগের চেয়ে আগ্রহ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। এতে এসব খাতের লেনদেনে অবস্থানও শক্তিশালী হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে বর্তমান সময়ে ব্যাংকিং খাতের লেনদেনের হার কমেছে। এ খাতের কোম্পানি থেকে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতায় এমনটি হয়েছে।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের মোট ৪৮টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এছাড়া প্রকৌশল খাতের ৩৪টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত। এসব কোম্পানি ছাড়াও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের হিসাববছর জুনে শেষ হয়েছে। এদের মধ্যে লেনদেনে প্রকৌশল খাতই এগিয়ে রয়েছে। অন্যান্য খাতের শেয়ারে আগ্রহ কম বলে লেনদেনে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।