নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সাহিত্য উৎসব-২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সরকারের এই প্রচেষ্টার কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। সেই লক্ষ্য, সেই স্বপ্ন নিয়েই আমরা কাজ করছি।’
বাংলাকে বিশ্বময় গর্বিত ভাষা বর্ণনা করে হাছান বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হয় বিশ্বময় মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। ৩৫ কোটি বাঙালি সারাবিশ্বে কথা বলে বাংলা ভাষায় এবং সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলা ভাষা হচ্ছে ষষ্ঠ ভাষা।
হাছান বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভ করেছি আজকে ৫১ বছর পার হয়ে ৫২ বছর পদার্পণ করছি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যারা আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রচলন করতে চেয়েছিল, যারা ভাষার তথাকথিত ইসলামিকীকরণ করার চেষ্টা করেছিল, যারা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গান পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করেছিল। বাঙালিরা বাংলাদেশেরÑএটা নিয়ে দ্বিধাবোধ থাকে না।’
তথ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এ ধরনের মানুষ আজও সক্রিয় ‘বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায়’। বাংলাদেশে তাদের নাগরিকত্ব, জাতীয়তা বাংলাদেশি। কিন্তু একটা পক্ষ আছে, তারা বলে ‘আমি বাংলাদেশি’, আসলে তারা কী তারা নিজেরাও জানে না। তারা এখনও সক্রিয়। আর এই গোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি এবং এই গোষ্ঠী এখনও তাদের ছায়াতলে সক্রিয়।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘যারা আমাদের ভাষার ওপরে হিংস্র থাবা দিয়েছিল, আমাদের ভাষা এবং সংস্কৃতিকে যারা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, আমাদের ভাষাকে বদলে দিতে চেয়েছিল, সংস্কৃতিকে বদলে দিতে চেয়েছিল, তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি।’
তথ্যমন্ত্রীর ভাষায়, পাঠ্যপুস্তকের বিভ্রান্তি নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তা ‘অবান্তর’ ও ‘অহেতুক’। ‘বিএনপির ছায়াতলে’ থাকা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বদলে দিতে চাওয়া সেই সক্রিয় মহলই পাঠ্যপুস্তক নিয়ে প্রশ্ন তুলে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়। আজকের দিনে আমি এটুকুই বলতে চাই, যারা ভাষার বিকৃতি ঘটায়, সংস্কৃতিকে যারা বদলে দিতে চায়, সেই অপশক্তি এবং এই অপশক্তির পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আক্তারুজ্জামান, বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।