কসবায় আইনমন্ত্রী

বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। এখনও যারা দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে, আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। পদ্মা সেতু নিয়েও ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করেছিল। ড. ইউনূছ তখন বিশ্বব্যাংকে গিয়ে বিরোধিতা করে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়ার পরও জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণের অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনও করা হবে। আর এতেই বিএনপির গা জ্বালা শুরু হয়ে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সদরের টি. আলী কলেজ মাঠে আয়োজিত কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে গতকাল সভাপতির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। তিন বছরের শাসনামলে তিনি দেশকে সোনার বাংলা করতে চেয়েছিলেন। জামায়াতকে ছাড় দেয়ায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ১৭ জন প্রাণ দিয়েছিল। খুনি-ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে, বন্দুকের জোরে সংবিধান পাল্টে দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েও পারেনি। এ দেশের জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের ন্যায় বসা খুনি জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষই উৎখাত করেছে।

বিএনপি নেতাদের মুখে লাগাম দেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, রাজনীতি করেন আপত্তি নেই। কিন্তু যদি আবার ১৫ আগস্ট করবেন এসব কথা বলেন, তাহলে আইনের মাধ্যমে আপনাদের দাঁত ভেঙে দেয়া হবে। আইনের মাধ্যমে যে শাস্তি দেয়া উচিত, সেই শাস্তিই দেব। আমরা চাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণতন্ত্র রক্ষা করে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হোক। আপনারা ষড়যন্ত্র করে এখানে কিছু করতে পারবেন না।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে এখনও গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, বন্দুকের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করে দেশকে পাকিস্তান বানাবে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। খুনি জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া এদেশের জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো বসেছিল। দেশের মানুষই তাদের দেশের মানুষ টিকে থাকতে দেয়নি।

কসবা টি. আলী ডিগ্রি কলেজ মাঠে বেলা ১১টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, এবাদুল করিম বুলবুল, বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ), জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। কসবা পৌর সভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানীর সঞ্চালনায় সম্মেলনের কাউন্সিলর, কসবা পৌর সভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সঞ্চালনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা ২টায় দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি পদে বিকল্প কোনো প্রার্থী না থাকায় সর্বসম্মতিক্রমে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভঁূইয়া জীবন নির্বাচিত হন।