Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 1:53 am

বাংলাদেশে প্রথম

আমাদের কৃষ্টির মূলে রয়েছে কৃষি। কৃষির উন্নতিই আমাদের উন্নতি। অতীতের কৃষক ও কৃষি সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে পরিষ্কার ধারণা দেয় কৃষি জাদুঘর। ভবিষ্যতের জন্য এ ধরনের প্রতিষ্ঠান পাথেয় হয়ে থাকে। এমন ধারণা থেকে ময়মনসিংহে কৃষি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) চত্বরে রয়েছে বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক প্রথম এ ‘কৃষি জাদুঘর’।

ইতিহাস

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিমে ও বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে জাদুঘরটি। এর দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী মন কাড়ে দর্শনার্থীদের। এর স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হোসেন। তার উদ্যোগে বাংলাদেশের নানা কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ভবিষ্যৎ প্রজজন্মের জন্য সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের চেষ্টা চালানো হয়। ২৪ জানুয়ারি ২০০২ ভিসি প্রফেসর মু. মুস্তাফিজুর রহমান জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধন করেন ভিসি প্রফেসর মো. আমিরুল ইসলাম, ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে এ জাদুঘর। একই বছরের ৩০ জুন ভিসি প্রফেসর ড. মোশারফ হোসাইন মিঞা সবার জন্য উš§ুক্ত করেন জাদুঘরটি। মূলত বাংলার হাজার বছরের কৃষি ঐতিহ্য ও বর্তমান কৃষি নিয়ে গবেষণার উদ্দেশ্যে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

 

উপকরণ

মই, লাঙল, বিন্দা, জোয়াল, নিড়ানি, কাঁচি, ঢেঁকি, মাতলা, ডুলি, ডালা, জৈব সার, বিভিন্ন জাতের ধান, গাইল, সবজি, ডাল, ঔষধি গাছ, সের, পোয়া, যাঁতি, মটকা, লোহার বাঁশি, ডেকচি, সিন্ধুক,

একতারা-দোতারা, তেলের ঘানি, হাল চাষের মডেল, নানা রকমের শস্য বীজ, কৃষকের বসতবাড়ির নমুনা, বিভিন্ন প্রকার মাটি, মাছ ধরার উপকরণ প্রভৃতি রয়েছে এখানে। সাপ, ব্যাঙ, কেঁচো, শামুক প্রভৃতির জীবাশ্ম রয়েছে। সাধারণত অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করা হয় এসব উপকরণ। পাশাপাশি উপহার হিসেবেও কৃষি উপকরণ নিয়ে থাকে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে উপহারদাতা ব্যক্তি বা সংস্থার নাম-ঠিকানা উপকরণের সঙ্গে লিখে রাখা হয়। এ ছাড়া বিশ্বের কৃষিপ্রযুক্তির সর্বশেষ অগ্রগতিবিষয়ক তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও উপস্থাপন করা হয়। নিদর্শনগুলো বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হয়। বিভিন্ন জাদুঘরের সঙ্গে তথ্য ও উপকরণ বিনিময়ও করে থাকে জাদুঘরটি। ভবিষ্যতে এ জাদুঘরের আওতায় বিরল উদ্ভিদ প্রজাতি চাষ, ঔষধি বৃক্ষ রোপণ, বিলুপ্তপ্রায় শস্যাদির চাষ, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে।

জাদুঘরটি সর্বসাধারণের জন্য উš§ুক্ত। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, গবেষক, কৃষক, কৃষি ও সম্প্রসারণকর্মীরা গবেষণার জন্য এখানে আসেন। এখানে প্রায়ই কৃষি ঐতিহ্য ও বিবর্তন নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

 

সময়সূচি

শনিবার ছাড়া সপ্তাহে প্রতিদিন সকাল ৯টা বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘরটি। কোনো প্রবেশমূল্য নেওয়া হয় না।