নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওমর জাফর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে তার দফতরে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইফাদের ১.২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে সহজ শর্তে কৃষি উন্নয়নে ইফাদ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঋণ ও অনুদান দেওয়ায় সংস্থাটির সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে অভূতপূর্ব সাফল্যের পর ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ইফাদ কার্যকর সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
ইফাদ বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘ ও মধ্য মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্তে প্রণীত কৌশলগত পরিকল্পনার সঙ্গে সহজকরণের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ পল্লী উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ইফাদ কান্ট্রি ডিরেক্টর ওমর জাফর বাংলাদেশে ইফাদের উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমাণ স্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, স্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে ইফাদের কার্যক্রম আরও বেগবান হবে এবং নতুন মাত্রা ও কাজের পরিসর বাড়বে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরেই আমরা আট দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে আট দশমিক ৩০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা ২০২৪ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১০ শতাংশ এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। বিশ্বে যে কয়েকটি দেশের রফতানি আয় খুব দ্রুত বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশের মানুষের ঋণ জিডিপি অনুপাত যে কোনো দেশের তুলনায় কম। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ একটি প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ এমডিজি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং এরই মধ্যে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশের স্থিতি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সংবলিত এসডিজি মূলধারার দিকে অগ্রসর হয়েছে। বাংলাদেশে ফল ও সবজি, যেমন- আম, আলু, আখ প্রভৃতি প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ইফাদের জন্য বড় সম্ভাবনা রয়েছে।
ইফাদের বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে আইএফএডি’র ১.২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী আইএফএডি’র তৃতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগ। বিশ্বব্যাপী ইফাদের ২৫০ প্রকল্পের শীর্ষ ১০টির মধ্যে বাংলাদেশের তিনটি প্রকল্প রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সাতটি চলমান প্রকল্প রয়েছে, যা পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন, কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করবে। আরও দুটি প্রকল্প নকশা বাস্তবায়নাধীন।
ওমর জাফর এ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবগত করেন এবং তাদের অংশীদারিত্ব আরও বাড়ানোর বিষয়ে দিকনির্দেশনার আশা ব্যক্ত করেন।
