Print Date & Time : 15 August 2025 Friday 8:53 pm

‘বাংলাদেশ’ নামকরণ স্মরণে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামকরণের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামকরণের একটি ঘোষণা দেন।

পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামে অভিহিতকরণ উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম ও পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডেটা কার্ড প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়।

গতকাল নিজ দপ্তর থেকে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ডেটা কার্ড উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ সময় তিনি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করেন।

ঢাকা জিপিও’র ফিলাটেলিক ব্যুরো স্মারক ডাকটিকিটের উদ্বোধনী খাম ও ডেটা কার্ড বিক্রি করবে। পরে দেশের সব জিপিও এবং ডাকঘর থেকে এগুলো বিক্রি করা হবে।

এ উপলক্ষে মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর আগেই দেশটির নামকরণ করেছিলেন হাজার বছরের ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনে লেখা ডায়েরি নিয়ে রচিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের একটি অংশের উদ্ধৃতি দিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘আমাদের স্বাধীন দেশটির নাম হবে বাংলাদেশ’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই আলোচনা সভায় বলেন, “একসময় এ দেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকু চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। …একমাত্র ‘বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনো কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। …জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান’-এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’। ’’

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ইতিহাসবিদদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ১৯৪৭ সালে বঙ্গ-প্রদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হলো। সে সময় পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলার নাম দিতে চাইল পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু এ নিয়ে সেই সময় থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলা ভাষার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলা। এরপর ১৯৫৭ সালে করাচিতে পাকিস্তানের গণপরিষদের তরুণ সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বক্তব্য দেওয়ার সময় ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামটির প্রতিবাদ করে বলেন পূর্ব বাংলা নামের একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আর যদি পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতেই হয়, তাহলে বাংলার মানুষের জনমত যাচাই করতে হবে। তারা নামের এই পরিবর্তন মেনে নেবে কিনা, সে জন্য গণভোট নিতে হবে। ’ ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, বাঙালি, বাংলা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাথা।