নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: অবশেষে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটির বিপরীতে বিমাদাবি দুই কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পেতে পাচ্ছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। এ ক্ষতিপূরণের টাকা বাংলাদেশ সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি) হিসাবে জমা হয়েছে, যা শিগগির জাহাজের মালিক বিএসসির হিসাবে জমা হবে। প্রতি ডলার ১০৬ টাকা হিসেবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩৮ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বিএসসি সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি চীনের ঋণ সহযোগিতায় ২০১৮ সালে বাংলার সমৃদ্ধিসহ মোট ছয়টি জাহাজ সংগ্রহ করে। সিংগাপুরভিত্তিক ডেনমার্কের ডেল্টা শিপিং কোম্পানি বিএসসির কাছে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ভাড়া নিয়ে (চার্টার) জাহাজটি পরিচালনা করত। গত বছরের ২৬ জানুয়ারি জাহাজটি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে ইস্পাত পণ্য নিয়ে যাত্রা করে। সুয়েজ খাল হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের এরগলি বন্দরে পৌঁছে। সেখান থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে ২৯ ক্রু নিয়ে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছে। সেখান থেকে সিরামিক কারখানার কাঁচামাল নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি বন্দর ত্যাগের কথা ছিল। কিন্তু অলিভিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের নাবিক না পাওয়ায় জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি। আর ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজটি বন্দরের বাইরে আসতে পারেনি। এ অবস্থায় জাহাজটি অন্য জাহাজের সঙ্গে অলিভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে। এর মধ্যে গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। এ হামলায় থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান ঘটনাস্থলে নিহত হন। একই সঙ্গে জাহাজটি নেভিগেশন সিস্টেমসহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য নাবিকরা প্রাণে বেঁচে গেলেও জাহাজটি চলাচলের উপযোগিতা হারায়। ফলে গত এক বছর জাহাজটি চলাচলে অনযুযোগী হয়ে অলিভিয়া বন্দরে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘বিমার টাকা এরই মধ্যে এসবিসিতে চলে এসেছে। বিএসসিতে আসেনি, চলে আসবে। আমাদের প্রিমিয়াম দিতে হবে, সেটা অ্যাডজাস্ট করতে হবে। সেটা অ্যাডজাস্ট করে বাকি টাকা আমাদের কাছে আসবে। এখানে প্রিমিয়াম বাবদ দিতে হবে আট মিলিয়ন (৮০ লাখ ডলার)।’