বাইডেন-শি বৈঠকের প্রভাবে বিশ্ব পুঁজিবাজারে উত্থান

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের মধ্যে আগামীকাল বুধবার বৈঠক হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপান অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এই দুই খবরের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব পুঁজিবাজারে। গতকাল সোমবার বিশ্বে বেশিরভাগ বাজার উত্থানের মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। খবর: এপি।

সোমবার জার্মানির ডিএএক্স সূচক শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ হাজার ২৮৭ দশমিক ০৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এতে তাদের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৭ হাজার ৭২ দশমিক

৩২-এ। ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচকও শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ হাজার ৩৮৬ দশমিক ৪২ পয়েন্ট হয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক শূন্য দশমিক ৩ এবং ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৩ ও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবারে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ দশমিক ৬ শতাংশ, ডাও জোনস ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং নাসডাক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এতে বলা হয়েছিল নভেম্বরের প্রায় সব কার্যদিবসের উত্থানের ধারায় থাকবে দেশটির সব মূল্যসূচক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুটি যুদ্ধ এবং বিশ্ব অর্থনীতি মন্থর হওয়ায় বাজারে উদ্বেগ রয়েছে। যদিও গতকাল বুলিস অবস্থান দেখা গেছে। বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফিচার হলো, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্টক বিক্রি সত্ত্বেও বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যদি বড় অঙ্কের স্টক বিক্রি করেন, সেক্ষেত্রে বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখার শঙ্কা রয়েছে।

বাইডেন ও শি আগামীকাল প্যাসিফিক রিম সামিটের সাইডলাইনে বৈঠকে বসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বে এরেনায় বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির নেতারা সরাসরি আলোচনা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েল-হামাস, তাইওয়ান ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং নির্বাচনে হস্তক্ষেপের মতো অনেক বিষয়ই উঠে আসবে এ বৈঠকে।

চলতি বছরের শুরুতে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, চীন তাদের আকাশে একটা স্পাই বেলুন পাঠিয়েছে। পরে মার্কিন যুদ্ধবিমান সেটি দক্ষিণ ক্যারোলিনার উপকূলে ভূপাতিত করে। এর আগে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সেই সময়ের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন, যার জেরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাইডেন এই সম্পর্ক আবার পুনরায় স্থাপনে ‘সংকল্পবদ্ধ’, কিন্তু চীনকে খুব একটা ‘আগ্রহী’ মনে হচ্ছে না।

এদিন এশিয়ার পুঁজিবাজারেও ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে। জাপানের স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিক্কেই ২২৫ প্রায় শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, পয়েন্ট হয় ৩২ হাজার ৫৮৫ দশমিক ১১। এদিকে হংকংয়ের সূচক হ্যাং সেং প্রায় শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ ঊর্ধ্বগামী হয়েছিল। এতে তাদের পয়েন্ট হয় ১৭ হাজার ৪৪০ দশমিক ৭৩। একই সময় চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তিন হাজার ৬৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করে।

তবে এশিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৯৪৮ দশমিক ৮০ হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ২ হাজার ৪০৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে দিন শেষ করে। এদিন লাল রঙে ছিল ভারতের পুঁজিবাজারের সব সূচক।

গতকাল নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে ইউএস ক্রুড অয়েলের দাম ৭৩ সেন্ট কমে ৭৬ ডলার ৪৪ সেন্ট হয়েছে, শুক্রবার যা ছিল ৭৭ ডলার ১৭ সেন্ট। বিশ্ববাজারে তেলের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৮০ সেন্ট কমে প্রতি ব্যারেল ৮০ ডলার ৬৩ সেন্ট হয়েছে, শুক্রবার যা ছিল ৮১ ডলার ৪২ সেন্ট।