ঢাকা ব্যাংকের ৩৯ কোটি টাকা খেলাপি

বাগদাদ গ্রুপের দুই পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামভিত্তিক বাগদাদ গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ তানভীর খান এবং মোহাম্মদ আজাদ খানকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন।

আদালত জানান, আসামিদের পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বিদেশে অবস্থান করছেন। এছাড়া এই আদালতে তাদের বিরুদ্ধে ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। এসব মামলার বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা টাকার পরিমাণ ৫০০ কোটিরও বেশি। মামলাগুলোর অধিকাংশের বয়স এক যুগেরও বেশি। এই অবস্থায় তারা দেশত্যাগ করলে জনগণের আমানতের টাকা আদায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ বাংলাদেশ থেকে অনেক ঋণখেলাপিই অর্থ পাচার করে কানাডার কথিত বেগমপাড়ায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আদেশের কপি অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সিটি ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা ২০১০ সালে বাগদাদ গ্রুপের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির মামলা করে। ২০১২ সালে আদালত সুদসহ ১৭ কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ দিলেও ৯ বছরেও তা পরিশোধ করেনি বাগদাদ গ্রুপ। গত বছরের ১০ অক্টোবর গ্রুপের চেয়ারম্যান ফেরদৌস খান আলমগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের রাউজানের বাসিন্দা ফেরদৌস খান আলমগীর ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। তিনি বেসরকারি সাদার্ন ইউনিভার্সিটিরও পরিচালক। তিনি দুই ভাই তানভীর ও আজাদ খানের সঙ্গে মিলে ২০১৩ সালে মৎস্য আহরণ, আবাসন, পরিবহনসহ আরও কয়েকটি ব্যবসার জন্য মেসার্স আলমগীর ব্রাদার্স, বাগদাদ ট্রেডিং, ফেরদৌস এন্টারপ্রাইজ, বাগদাদ এক্সিম করপোরেশন, বাগদাদ পরিবহন ও বাগদাদ প্রপার্টিজ নামে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন।

এসব ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধে গড়িমসি শুরু করেন আলমগীর। এর মধ্যে আছে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৫৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৪৬ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ১২ কোটি টাকা ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে ফেরদৌস খান আলমগীরের বিরুদ্ধে।