নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক এখন সাত হাজারের ওপরে রয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিসহ মৌলভিত্তির কয়েকটি খাতের কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এর ওপর ভর করেই বেড়েছে সূচক। কিন্তু কভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির হার শঙ্কায় ফেলেছে বিনিয়োগকারীদের। বাজার মূল্যে লাভে থাকা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়া শুরু করেছেন।
এতে বিক্রয় চাপে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দর কমে গেছে গতকাল। ফলে সূচকের পতন হয়েছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৩ দশমিক সাত পয়েন্ট। একইসঙ্গে কমেছে অন্য দুই সূচকও।
তথ্য বলছে, ডিএসইতে অংশ নেয়া ৩৮০টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নেয়। কিন্তু দিনশেষে দেখা যায়, এর মধ্যে ২৭০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭১টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির। এ সময়ে ব্লকে লেনদেন হয়েছে ৩২টি কোম্পানির শেয়ার। ৬৬ বার লেনদেনের মাধ্যমে এতে শেয়ার হাতবদল হয় ৪৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার।
গতকাল দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ছিল সাত হাজার ১৯ পয়েন্টে। দীর্ঘ কয়েক মাস পর সম্প্রতি ফের প্রধান সূচক সাত হাজার ঘর পার করেছে। এ সময়ে মূলত রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের বাজার মূল্য বেড়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও প্রকৌশল খাতের শেয়ারের দর বেড়েছে। এর ওপর ভর করেই বেড়েছে সব সূচক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে এখনও সক্রিয় রয়েছে কারসাজি চক্র। দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো নিয়ে তারা সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এরাই ইচ্ছে মতো লেনদেন করছে। এখন বাজার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় শেয়ার বিক্রয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন অনেকেই।
এর পেছনে রয়েছে কভিড সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়া। সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি-বেসরকারি অফিস গতকাল থেকে অর্ধেক জনবল নিয়ে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। আগেও দেখা গেছে, ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি কমে গিয়েছিল। এখনও হয়তো সেদিকেই যাচ্ছে দেশের পরিস্থিতি।
জাতীয় অর্থনৈতিক চাপের প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এ জন্য বিনিয়োগকারীরা সতর্ক হয়ে পড়েছেন। অনেকেই হাতে থাকা শেয়ার বিক্রয় শুরু করেছেন। বিশেষ করে যেসব শেয়ারের বাজার মূল্য সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজির নিরাপত্তায় এমন পদক্ষেপ দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এর ফলেই শেয়ারের বাজার মূল্যের সঙ্গে কমে গিয়েছে পূর্বের চেয়ে গতকালের লেনদেন।
মূলত বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় লেনদেনের এমন হাল হয়েছে বলে মনে করছেন সবাই। মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সর্বোচ্চ দুই দশমিক আট শতাংশ মুনাফা দিয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাত। এরপরই ছিল খাদ্য খাতে এক দশমিক চার শতাংশ, ট্যানারি এক দশমিক এক শতাংশ। অন্যদিকে সর্বোচ্চ লোকসান দেখা গেছে সিরামিক তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ, বিবিধ দুই দশমিক চার শতাংশ ও সেবা খাতে দুই দশমিক এক শতাংশ।