নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজেট উপস্থাপনের পরদিনই রাজধানীর বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এজন্য মিল মালিকদের দায়ী করছেন চাল ব্যবসায়ীরা। আর মুদিপণ্য স্থিতিশীল থাকলেও ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বাড়তি বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ঈদের পরও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১৭০ টাকা, ক্রেতাশূন্যের অজুহাতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ।
২০২০-২১ অর্থবছরের এই বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কমানো হয়েছে। পাশাপাশি কমছে আমদানি করা চিনি ও রসুনের অগ্রিম আয়কর। ফলে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে দাম কমবে। তবে বাজেট পেশের পরদিনই বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভরা মৌসুমে গত দুই বছরের মধ্যে এবারই চালের দাম সবচেয়ে বাড়ছে বেশি। তাদের দাবি, বাজেট ঘোষণার আগেই চাল মজুত করেছে সরকার; তাই চালের দাম বৃদ্ধির কারণ মিল মালিকদের সিন্ডিকেটকেই দায়ী করলেন তারা।

এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মধ্য ডাল, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেলসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম সহনীয় থাকলেও বাজেট পাসের পর তা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বর্ষা মৌসুমে যেখানে সবজির দাম সহনীয় থাকার কথা, সেখানে নানা অজুহাতে আলু, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়শ, কাঁচামরিচসহ সব ধরনের সবজির কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে বাজারে সবজি ভরপুর থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে বাজারে বর্তমানে পটোল ৪০-৫৫ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙা-ধুন্দল ৪০-৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০-৭০ টাকা, করলা ও উচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি টমেটো ৪০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৪০-৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মুরগির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৫৫-১৬০ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৪০-১৫০ টাকা, সোনালি মুরগির ১২০-১৩০ টাকা, হাঁসের ১১৫-১২৫ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়তি রয়েছে মাছের বাজারেও। বাজারে দাম বেড়ে প্রতি কেজি কাঁচকি মাছ ৩৮০-৪২০ টাকা, মলা ৪০০-৪৫০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট পুঁটি ৩০০-৪০০ টাজা, টেংরা মাছ (তাজা) ৭০০-৮০০ টাকা, দেশি টেংরা ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি শিং (আকারভেদে) ৩০০-৫৫০ টাকা, পাবদা ৩২০-৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০-৭০০ টাকা, বাগদা ৫৫০-১০০০ টাকা, হরিণা ৪০০-৫৪০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০-৫৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০-৩২০ টাকা, পাঙাশ ১৫০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, কৈ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ২০০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১০০০-১০৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে দাম কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের। কেজিতে পাঁচ টাকা কমে এসব বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, কেজিতে ২০ টাকা কমে রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১৪০-১৫০ টাকা।