বাংলাদেশ চেম্বারের প্রতিক্রিয়া

বাজেটে শিল্প টিকিয়ে রাখার নির্দেশনা দেখা যাচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বর্তমান বাজেটে শিল্প টিকিয়ে রাখার নির্দেশনা দেখা যাচ্ছে না। দেশের শিল্প খাত বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছে। দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো তার ৬০-৭০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে নিয়মিত কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন সেবা পাচ্ছে না শিল্পগুলো। সরকারের সংকোচন নীতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্রাই আপ পলিসির কারণে ব্যাংসমূহ বন্ডে বিনিয়োগের দিকে উৎসাহিত হচ্ছে আবার সরকারও ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকের উচ্চ সুদহার এবং তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিচ্ছে। নতুন বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে।

সংগঠনটি আরও বলে, এ বছর প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬.৬ শতাংশ। নতুন করে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বেকার হয়েছে। এর ফলে বর্তমান শিল্পসমূহ কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে আমদানি বিকল্প শিল্প এবং কীভাবে কারখানাগুলোর সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।  

বিসিআই বলছে, বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি, কর জিডিপি অনুপাত না বাড়া ও রিজার্ভ ক্ষয় হওয়ার মতো অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য বাজেট প্রণয়ন খুবই কঠিন একটা কাজ। এ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ; যা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হবে। বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রধান লক্ষ্য বলা হলেও টানা ১৪ মাস ধরে ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ প্রস্তাবিত বাজেটে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

বাংলাদেশ চেম্বারের মতে, এবারের বাজেটে এলইডি বাল্বের ওপর করা আরোপ করা হয়েছে। আবার দেশে উৎপাদিত এসি এবং ফ্রিজের ওপর করারোপ করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিতে পড়বে এ খাত।

সংগঠনটি জানায়, প্রস্তাবিত বাজেট নিঃসন্দেহে উচ্চাভিলাষী নয়। বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির অনুপাতে ৪.৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে; যা আশাব্যঞ্জক। তার পরেও ঘাটতির ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অভ্যন্তরীন উৎস হতে সংগ্রহ করা হবে। সংগঠনটি সরকারের ব্যয় কমিয়ে এবং বিদেশি উৎস হতে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে ঘাটতি মেটানোর দিকে জোর দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছে।