বাড়ছে জীবনযাত্রার খরচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের দুঃখ প্রকাশ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কভিড-পরবর্তী বিশ্বে বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতির সংকটে পড়েছে যুক্তরাজ্যও। সামনের মাসগুলোতে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে অর্থনীতিবিষয়ক বিভিন্ন জরিপ। মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন ইংল্যান্ডের সাধারণ মানুষ। এ পরিস্থিতিতে জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইংল্যান্ডের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইংল্যান্ডের জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি। খবর: বিবিসি।

এদিকে বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতির মধ্যেই সবাইকে অবাক করে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড তাদের সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ হার সামনের দিনগুলোতে বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে তারা। বর্তমানে ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার শূন্য দশমিক এক শতাংশ।

ব্রিটেনের মূল্যস্ফীতি ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা দুই শতাংশকে ছাড়িয়ে বর্তমানে সরকারি হিসাবে তিন দশমিক এক শতাংশে অবস্থান করছে। তবে বাস্তবে মূল্যস্ফীতি আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যেই এই মূল্যস্ফীতি সরকারি হিসাবেই পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা।

এ ব্যাপারে অ্যান্ড্রু বেইলি বলেন, পরিষ্কারভাবেই মূল্যস্ফীতি প্রতিটি ঘরে ঘরে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। আমি নিশ্চিত তারা এর আঘাত অনুভব করছেন, কারণ জিনিসের দাম এখন বাড়তি। তবে ব্যাংকের সুদের হার না বাড়ানোর পেছনে তার যুক্তি হলো- জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে সেটা পর্যবেক্ষণ করা।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের বর্তমান মূল্যস্ফীতির বিষয়টি একটু আলাদা। কারণ যুক্তরাজ্যে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এই মূল্যস্ফীতি বাড়েনি। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে কভিডের কারণে বিশ্বজুড়ে সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ার কারণে।

তবে আগামী ডিসেম্বরে ব্যাংকের পরবর্তী নীতিনির্ধারণী বৈঠকে সুদের হার বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মনিটরি পলিসি কমিটি। প্রতি ছয় সপ্তাহ পরে মুদ্রানীতি নিয়ে বৈঠকে বসে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মনিটরি পলিসি কমিটি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি গ্যাসের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। কর্মী ঘাটতিতে থাকায় বিপুল পরিমাণ কার্যাদেশের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আসন্ন ক্রিসমাসের উপহারসামগ্রী এবং শিশুদের খেলনা সংকট দেখা দেবে বলে আগেই হুশিয়ারি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউরো জোনে মূল্যস্ফীতি বাড়ায় আবাসন খরচ বাড়ছে: এদিকে ইউরোজোনেও বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। এর ফলে এ অঞ্চলের আবাসন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) প্রধান নীতিনির্ধারক রবার্ট হোলজম্যান। গতকাল শুক্রবার তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ বছরের নীতিনির্ধারকদের আবাসন খরচ নিয়ে ভাববার সময় এসেছে।

ইউরোপের আবাসন খরচ কতটা বাড়তে পারে জানতে চাইলে অস্ট্রিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই প্রধান বলেন, সামনের মাসগুলোতে শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ বাড়তে পারে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটা ছোট পরিমাণ নয়।

ইসিবি এতদিন মূল্যস্ফীতির হিসেবে আবাসন খরচ আলাদা রেখেছে। কিন্তু আগামীতে মূল্যস্ফীতির হিসাবে তা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে ইসিবিপ্রধান জানান।