Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 9:32 pm

বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ মেহেরপুরে চিকিৎসক সংকট

শেয়ার বিজ ডেস্ক : মেহেরপুর জেলায় এখন দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা ও সন্ধ্যায় পড়ছে ঘন কুয়াশা। ঋতু পরিবর্তনের আভাস। বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বয়োবৃদ্ধ। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বরে অসুস্থ হয়ে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে। চিকিৎসকরা চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন।

মেহেরপুর জেলার আবহাওয়া এখন না শীত না উষ্ণ। দিনে রোদের তাপ। শেষ রাতের হাওয়ায় হালকা শিরশির ভাব। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ এখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেলার তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মানুষ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। গাংনী উপজেলা ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ১৩৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে পুরুষ ৪৩ জন, শিশু ৬৫ জন এবং ২৫ জন নারী নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন। শুধুমাত্র টিকিটের মাধ্যমে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে দেড় শতাধিক শিশু।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, প্রতিদিন প্রায় দেড় শতাধিক শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শিশুদের অধিকাংশ ঠান্ডা-জ্বর। অনেককেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে; এছাড়া অনেকেই ভর্তি আছেন। প্রতিদিন রোগীদের চাপ বাড়ছে। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারণে আমরা অনেকটা হাঁপিয়ে উঠছি।
রোগ নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ডা. আদিলা আজহার বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কখনও ঠান্ডা, কখনো গরম। দিনে গরমের কারণে সমস্যা আর রাতে ঘুমানোর সময় ঘরে বৈদ্যুতিক পাখা চালানোর কারণে ঠান্ডা লেগে শরীরে তাপমাত্রার হেরফের হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতা ও জ্বর দেখা দিচ্ছে। আর বাইরের বিভিন্ন খাবার ও পানি খাওয়ায় ডায়রিয়া এবং পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।

সরেজমিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, আউটডোরে রোগীদের দীর্ঘ সারি। টিকিট রেজিস্ট্রারে দেখা যায় প্রতিদিন গড়ে হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে। পা ফেলার জায়গা নেই। মেঝে ও সিঁড়িতেও রোগীরা ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্স। শিশুদের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। রোগীদের অধিকাংশই জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। আর শিশুরা নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত।

মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বিগত এক সপ্তাহ ধরে বিশেষ করে শিশু রোগীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি। কয়েক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে ওষুধ পথ্যের সংকট নেই। চিকিৎসকরা গুরুত্বের সঙ্গে চিকিৎসা দিচ্ছেন। মেহেরপুরের সিভিল সার্জন মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিশেষ করে শিশু কনসালট্যান্ট জরুরি প্রয়োজন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসক দেয়ার জন্য আবেদন করেছি। এখনো কোনো সাড়া পাইনি।