এফবিসিসিআইয়ের শঙ্কা

বাড়তি শুল্কারোপে নির্মাণ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে জমি ও অ্যাপার্টমেন্টের রেজিস্ট্রেশনকালে উৎসে আয়কর বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট, পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্লাস, কিচেনওয়্যারসহ কমপক্ষে ১০-১২টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফলে নির্মাণ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণসহ রিজার্ভ বাড়ানো, ডলার সংকট এবং বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগ, আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স সবকিছুর গতি নি¤œমুখী। অথচ মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী।

গতকাল শনিবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি জসিম উদ্দিন এসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাজেটে টেক্সটাইল, রপ্তানি ও এসএমই খাতের জন্য তেমন কিছুই দেখা যায়নি। টেক্সটাইল খাতের উন্নয়নে ম্যান মেড ফাইবার থেকে ভ্যাটসহ সব ধরনের কর প্রত্যাহার এবং রপ্তানির উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ করার দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আসন্ন বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। বিশাল আকারের এই রাজস্ব সংগ্রহ করা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া বিশ্বে বিভিন্ন সংকটের কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকসহ রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন, ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পৌঁছাতে দেশের অর্থনীতির আকার স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। এজন্য দেশের বাজেটের আকারও বাড়ছে। বাজেটের আকার ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৭৯ হাজার ৬১৪ কোটির তুলনায় সাড়ে ৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের তুলনায় ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। বাজেটে জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের জনগণের চাহিদা ও আকাক্সক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাজেটের এই আকার অবাস্তব নয়। দেশের অর্থনীতির পরিকাঠামো বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাজেটের আকারও প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রা শিরোনামে বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ বাজেট কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলার দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এ ছাড়া তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, দূরদর্শী বিচক্ষণ পরিকল্পনা এবং আন্তরিক প্রয়াস আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সুদৃঢ় করেছে। গত ১৪ বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশের বেশি। জিডিপির আকার অনুযায়ী ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের ৬০তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ১৪ বছরের ব্যবধানে দেশ আজ বিশ্বে ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে।