নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় আমরা কতটা প্রস্তুত? ধরন যা-ই হোক, কভিড মোকাবিলার সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হচ্ছে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও বারবার হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি পালন করা, যা থেকে আমরা অনেক দূরে সরে এসেছি। এই মুহূর্ত থেকে সব স্বাস্থ্যবিধি পালন আবার জোরেশোরে শুরু করতে না পারলে সামনে হয়তো খারাপ সময় দেখতে হবে আমাদের। বিশেষ করে বাড়ির বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সরকারের ঘোষিত ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ বিধিটি যেন সত্যিকারভাবে কার্যকর হয়, সেদিকে কড়া নজর দিতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটন, সামাজিক অনুষ্ঠান, উৎসব প্রভৃতিতে অংশগ্রহণ বেড়েছে। সামনে রয়েছে বাংলা নববর্ষ, পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষে মানুষের চলাচল, কেনাকাটা, ভ্রমণ ও সমাবেশ আরও বাড়বে। এখনই সময় এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ আরোপ করা ও সচেতন হওয়া। এমনকি রমজানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি, তারাবিহ নামাজের সমাবেশ প্রভৃতি ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিতে জোর দিতে হবে। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক রাখা, মসজিদ বা প্রার্থনালয়ে প্রবেশের আগে-পরে হাত ধোয়া, মেঝে বারবার জীবাণুমুক্ত করা প্রভৃতি বিষয়ে জোর দিতে হবে।
উৎসবের আগে বিপণিবিতানে স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক করতে হবে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, পর্যটন স্থান প্রভৃতিতেও বাধ্যবাধকতা বাড়ানো উচিত এখনই। সবচেয়ে ভালো হয়, অপ্রয়োজনীয় সমাগম ও ঘোরাঘুরিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা। কভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে ভারতের কয়েকটি প্রদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশই আবারও এ ধরনের আংশিক লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সামনে বিদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেন। তাদের যথাযথভাবে কোয়ারেন্টাইন করা, নজরদারি করা বা পরীক্ষার আওতায় আনার ব্যাপারে মনোযোগ বাড়াতে হবে। বিমানবন্দর, বাস ও রেলস্টেশনগুলোয় বাড়াতে হবে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সব উপায়।
বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি যেমন অনেকেই মানছেন না, তেমনি অনেকেই জ্বর-কাশির উপসর্গ হলে তেমন আমলে না নিয়ে সামাজিক মেলামেশা করছেন, অফিসে যাচ্ছেন। নমুনা পরীক্ষার প্রতিও আগ্রহ কমেছে অনেকের। এই প্রবণতা রোধ করতে হবে। কভিডের উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্র আগের মতো আইসোলেশনে থাকার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি পালন করা ছাড়া কভিড অতিমারি রোধের দ্বিতীয় কার্যকর উপায় হচ্ছে কভিডের টিকা। দ্রুততম সময়ে যত বেশিসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনা যাবে, ততই মঙ্গল। গবেষণা বলছেন, টিকাদানের পর কভিড সংক্রমণ হবে না তা নয়, তবে তার তীব্রতা ও হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই কমবে।