Print Date & Time : 1 August 2025 Friday 5:21 am

বাণিজ্যিক বিচারে জলপথে পণ্য পরিবহন বেশি লাভজনক

মাইনুল ইসলাম চিশতী: যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো সুষ্ঠু ও চলমান রাখতে এবং সামগ্রিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমদানি-রপ্তানির কোনো বিকল্প নেই। কোনো দেশ বা দেশের ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে পণ্যসামগ্রী দেশের অভ্যন্তরে বিক্রির জন্য আনলে তাকে বলা হয় আমদানি। অন্যদিকে এক দেশের উদ্বৃত্ত পণ্য ও সেবাসামগ্রী অন্য দেশে বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় রপ্তানি। এই আমদানি-রপ্তানির জটিল সমীকরণে যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ঘুম কাজ করে যাচ্ছে, তাদের বলা হয় শিপিং লাইন বা শিপিং কোম্পানি (যাদের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নিজস্ব মালবাহী জাহাজ রয়েছে)। শিপিং লাইন হলো মূলত নদীপথে জাহাজের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন ব্যবসা।

দেশি-বিদেশি জাহাজ পরিচালনার জন্য প্রতিটি দেশে বন্দরকেন্দ্রিক শিপিং অফিস রয়েছে। কোনো জাহাজ বন্দরে আসার পর সেসব শিপিং অফিস থেকে জাহাজের যাবতীয় কাজের তদারক করা হয়। প্রতিটি জাহাজের ক্ষেত্রে বন্দর, কাস্টমস, নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তর, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরসহ অনেকগুলো সংস্থা থেকে নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। আবার জাহাজ বা কনটেইনার পরিবহন পরিচালনাকারী বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে প্রতিনিয়ত ই-মেইলে যোগাযোগ করতে হয়। শিপিং অফিসে কর্মরত লোকবলই এসব কাজ সম্পন্ন করে থাকে। মালিকানার ধরন অনুযায়ী মূলত তিন ধরনের শিপিং কোম্পানি রয়েছে দেশেÑসরাসরি বিদেশি মালিকানাধীন, দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন এবং জাহাজ পরিচালনাকারী বিদেশি সংস্থাগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধি। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী জানান, সমিতির সদস্যভুক্ত প্রায় ৪৫০ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানভেদে ১৫ থেকে ১৫০ জন পর্যন্ত জনবল থাকে প্রতিটি শিপিং কোম্পানিতে।

বাণিজ্যগত দিক থেকে বিচার করলে জলপথে পণ্য পরিবহন সব থেকে বেশি লাভজনক; কারণ এতে স্বল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে একস্থান থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্যÑসেটা তৈরি পোশাক (রেডিমেড গার্মেন্ট), খাদ্যসামগ্রী, মাছ, চর্মজাত পণ্য বা কাঁচা পণ্যই হোক, সহজেই স্থানান্তর করা যায়। শিপিং কোম্পানিতে আয়ের মূল উৎস হচ্ছে গ্রাহক থেকে আদায়কৃত ফ্রেইট চার্জ, যা অধিকাংশ সময় বৈদেশিক মুদ্রায় হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতেও এ ইন্ডাস্ট্রি বিশাল ভূমিকা পালন করে আসছে। সমগ্র বাংলাদেশের ৭০ শতাংশের ওপর আমদানি-রপ্তানি হয় সমুদ্রপথে বা জাহাজযোগে। বাংলাদেশ বিশ্বের প্রায় ৩০ দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করলেও এর রপ্তানি বাজার মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে কেন্দ্রীভূত। ২৫-৩০ বছর ধরে বাংলাদেশে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিপিং কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব অফিস খোলায় বর্তমানে সক্ষম ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এ ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত, যেখানে উন্নত মানের বেতনাদি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেই জলপথে পণ্য পরিবহন ব্যবসায় সরাসরি জড়িত রয়েছে দেশি-বিদেশি ছোট-বড় বিপুলসংখ্যক ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানি, যাদের নিজস্ব জাহাজ না থাকলেও সেখানে রয়েছে কাজ করার প্রচুর সুযোগ এবং আমদানি-রপ্তানিতে ক্যারিয়ার গড়ার হাতছানি। ফলে বর্তমানে শিক্ষিত তরুণ বা যুবকদের কাছে এই ইন্ডাস্ট্রি ব্যাংক, মাল্টিন্যাশনাল বা টেলকোর মতোই ক্যারিয়ার হিসেবে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তাই অনেকেই এখন এ ধরনের পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

এ ইন্ডাস্ট্রিতে আকর্ষণীয় বেতন, কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত গাড়ি, মেডিকেল সুবিধা, ইন্স্যুরেন্স, নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট, দ্রুত প্রমোশন, গ্র্যাচুইটি, বিনোদন ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ নানা সুবিধা রয়েছে। দেশে বহু বেসরকারি শিপিং প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলোয় কাজের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। অনেকটা সরকারি চাকরির মতোই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন এসব সেক্টরের কর্মীরা। আরও রয়েছে বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের জন্য বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ, যা সচরাচর কোনো লোকাল ব্যাংক বা টেলকোর ক্ষেত্রে দেখা যায় না। তাই এ প্রজšে§র বিপুলসংখ্যক ছেলেমেয়ে ধীরে ধীরে এই শিপিং ইন্ডাস্ট্রির দিকে ঝুঁকছেন। অবশ্য সব প্রতিষ্ঠানই যে উপরোক্ত সব সুবিধা প্রদান করে তা নয়। তথাপি এটি একটি স্পেশালাইজড ইন্ডাস্ট্রি বিধায় সঠিক কাজ জানা এবং খুঁটিনাটি বিষয়ে পারঙ্গম ব্যক্তির পক্ষে একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে কাজ না পাওয়ারও কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। অনেক সময় এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে ওভারসিজ পোস্টিংয়েরও সুযোগ হয়ে থাকে, যা একজন কর্মীকে আরও দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রযুক্তিগতভাবে অনেক এগিয়ে নিয়ে যায়। আগেই বলেছি, শিপিং একটি স্পেশালাইজড ফিল্ড, যেখানে বাংলাদেশে যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শত শত শিপিং বা ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং প্রতিষ্ঠান থাকলেও দ্রুততা ও নির্ভুলভাবে কাজ করার মতো দক্ষ জনবলের বেশ অভাব পরিলক্ষিত হয়।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, বিআইজিডি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে সারা বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী চার হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীর ওপর একটি জরিপ চালায়। সেখানে দেখা যায়, এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে কম্পিউটার ও ইংরেজি ভাষায় আত্মবিশ্বাসী মাত্র ১৬ শতাংশ! এদিকে অধিকাংশ শিপিং ও ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের যাচাই করা হয় তার ‘জব হিস্ট্রি’র মাধ্যমে। একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের পাশাপাশি মোটাদাগে দেখা হয় আবেদনকারীর নেতৃত্ব গুণাগুণ, কমিটমেন্ট, বুদ্ধিমত্তা, দূরদৃষ্টি, সৃজনশীলতা, দায়িত্ববোধ, সততা, ফাংশনাল নলেজ, সর্বোপরি আসলেই তিনি কাজটির জন্য উপযুক্ত কি না। ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের স্মার্টনেস, যোগাযোগ দক্ষতা, কম্পিউটার স্কিল, অ্যাম্বিশন, নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার আগ্রহ, এক্সট্রা কারিকুলার ও ভলেনটারি অ্যাক্টিভিটি আছে কি না, প্রেজেন্স অব মাইন্ডÑএসব বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। ফলে নতুন প্রজšে§র ছেলেমেয়েদের জন্য প্রধানত শিপিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে দু-একটি ব্যাপারে অবশ্যই নজর দিতে হবে:

(ক) যেহেতু এই ইন্ডাস্ট্রির যাবতীয় লেনদেন, চুক্তি, কথোপকথন ইংরেজি ভাষায় হয়, তাই ইংরেজিতে যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবেÑসেটা মৌখিক কিংবা লিখিত দুটোই। শিপিং জগতের অনেকেই যথেষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই শুধু ভাষাগত দক্ষতার দরুন অনেক ওপরে চলে এসেছেন।

(খ) ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি কম্পিউটার চালনায় যথোপযুক্ত দক্ষতা থাকতেই হবে। ‘দক্ষতা’ মানে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বা কোডিং জানা নয়, একদম মূল বা বেসিক বিষয়গুলো; যেমনÑউইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করা, বেসিক অফিস প্রোগ্রামিং (অন্তত মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট ও আউটলুকে যথেষ্ট দক্ষতা রাখা) প্রভৃতি। এর কোনো বিকল্প নেই অন্তত শিপিং ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে। 

মুক্তবাজার অর্থনীতির এ যুগে বাংলাদেশেও করোনার অভিঘাত সঞ্চারিত হয়েছে প্রধানত রপ্তানি খাত, প্রবাসী আয়, অভ্যন্তরীণ ও ব্যবসায়িক-যোগাযোগ ব্যবস্থায়। নি¤œবিত্তদের জীবনযাত্রার মানের অবনতি ঘটে। করোনা সংকটে সরকারের আয়ের তুলনায় ব্যয়ের পরিমাণ ও ক্ষেত্রও গেছে বেড়ে। দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালে লাখো মানুষ চাকরি হারিয়েছে, দারিদ্র্যের হার হয়েছে দ্বিগুণ, অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে দিশাহারা অবস্থায় পড়েছে বেকার জনগোষ্ঠী। প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের চাকরির বাজারে যোগদান করছেন। তাদের বড় একটি অংশ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। সদ্য পাস করা কর্মহীন গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে সঙ্গে করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে নতুন করে বেকার হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কভিড-১৯-এর কারণে বাংলাদেশে প্রতি চারজনের একজন কর্মহীন বা বেকার রয়েছেন (প্রায় ২৭.৩৯ শতাংশ)। আইএলও বলছে, মহামারিতে তারা তিনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একদিকে বেকারত্ব, সেইসঙ্গে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণও ব্যাহত হচ্ছে তাদের। এতে তাদের চাকরিতে প্রবেশ ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। দেশের সিংহভাগ মানুষের আয় গিয়েছিল কমে। অনেক নামি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক তাদের কর্মী ছাঁটাই না করলেও বেতন দিয়েছিল কমিয়ে এবং বোনাস বা অন্যান্য সুবিধা সাময়িকভাবে করেছিল বন্ধ। বিগত বছরে ব্যক্তিগতভাবে আত্মীয়-অনাত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে যে পরিমাণ একটি চাকরি দেয়ার অনুরোধ পেয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। আমদানিকারক দেশগুলো তাদের অর্থনীতি সচল রাখতে হিমশিম খাওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত। এ সময়ে বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ করেছে এক নজিরবিহীন ত্রিপক্ষীয় সংকট। সেই তিনটি পক্ষ হলো স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও খাদ্য। যেসব দেশে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করত, সেসব দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গার্মেন্ট রপ্তানি ও রেমিট্যান্সÑএ দুটো মিলিয়ে বাংলাদেশের জিডিপিতে অবদান প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বৈশ্বিক পোশাক আমদানি ২৩ শতাংশ কমে যায়। দেশে দেশে লকডাউনের কারণে মানুষ পোশাক কেনা কমিয়ে দেয়। ফলে খুচরো বিক্রেতাদের কাছে জমে পোশাকের স্তূপ। এতে অনেক ব্র্যান্ডের কারখানা আগের কার্যাদেশ বা অর্ডার বাতিল করে; অনেকে প্রকৃত দামও দেয় কমিয়ে। সিপিডির সম্মানিত ফেলো অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান তার এক গবেষণা প্রবন্ধে দেখিয়েছেন, এ সময়ে পোশাক শ্রমিকদের আয় কমেছে আট শতাংশ। তবে আশার কথা, বাংলাদেশ সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, লকডাউনের ঘোষণা, ক্ষেত্রভিত্তিক প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্রণোদনা এবং সর্বস্তরে সম্প্রতি দেশভিত্তিক অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের কোভিশিল্ড টিকাদান কর্মসূচি প্রভৃতি বিষয় মিলিয়ে বর্তমানে দেশের বাণিজ্য ও শিল্প খাত অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে প্রথমে স্বল্পপরিসরে হলেও পরে স্বাভাবিক নিয়মেই যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পোশাক খাতে ২০২০ সালের এপ্রিলে অনিশ্চয়তা ৩৬  শতাংশ থাকলেও সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তা কমে চার শতাংশ হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে খুবই আশাপ্রদ খবর। ফলে সামগ্রিক বাণিজ্য খাত ও অর্থনীতি খুব শিগগিরই আগের অবস্থানে ফিরে আসবে, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। তৈরি পোশাকশিল্প, আমদানি ও রপ্তানির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে শিপিং খাত বা শিপিং ব্যবসা। গত বছর লকডাউনের সময় চট্টগ্রামে কনটেইনার হ্যান্ডলিং, জাহাজ আসা-যাওয়া, তথা পোর্ট অপারেশন অনেকটাই বন্ধ বা অত্যধিক ধীরগতির ছিল, যা এখন আগের মতোই পুরোদমে চলছে। এটি একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতির পূর্বাভাস।

পরিশেষে সব চাকরিপ্রত্যাশী ভাইবোনকে বলব, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে বন্ধ থাকলেও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখতে হবে। এই করোনাকালে অনেককেই দেখা গেছে ঘরের ভেতর শুয়ে-বসে, টিভি দেখে বা  মোবাইল ফোনে গেম খেলে অযথা সময় নষ্ট করছেন। মনে রাখবেন, এ ধরনের প্যানডেমিক বা মহামারি পরিস্থিতি কিন্তু খণ্ডকালীন বা চিরস্থায়ী নয়। করোনার কারণে ঘরে বসে থাকলেও ইন্টারনেটের দরুন বিশ্ব এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। কাজেই ঘরে থেকেও যে কোনো বিষয়ে সম্যক ধারণা, শিক্ষা বা ট্রেনিং নেয়া যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকির দরুন এখন বহু দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অল্প কিছু ফি’র বিনিময়ে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অনলাইন ট্রেনিং দিচ্ছে, যা সহজেই এনরোল করে অংশ নেয়া যায়। গুগল কিংবা ইউটিউবের মাধ্যমে যে কোনো বিষয়ে ঘরে বসেই কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়। মনে রাখতে হবে, দক্ষ মানবসম্পদ বা দক্ষ লোক যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাম্য। বর্তমান যুগ হলো চরম প্রতিযোগিতার। কাজেই শিপিং হোক বা অন্য কোনো ফিল্ডই হোক, কভিড-১৯-এর এই পরিস্থিতির পর খুব শিগগিরই দেশের অর্থনীতি ও স্বাভাবিক কার্যক্রম আবার আগের মতোই সচল হয়ে উঠবে। ফলে সে সময় যেন নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করা যায়, তার প্রস্তুতি কিন্তু এখনই নিতে হবে।

মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান

ওশেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (বাংলাদেশ) লি.