শেয়ার বিজ ডেস্ক: কয়েক দফা আলোচনায় কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পেরে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ নিরসনে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বেইজিংয়ের ওপর আরও বেশি আমদানি শুল্কারোপের পরিকল্পনার পর গত মাসে ফের বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করে। গতকাল শনিবার জাপানের ওসাকায় জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে সাইডলাইন বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পুনরায় আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছেন। এছাড়া নতুন করে চীনা পণ্যে শুল্কারোপ করবে না বলে নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। খবর: বিবিসি ও রয়টার্স।
বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছেন, তাদের মধ্যে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও ঘোষণা দিয়েছেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো চীনা টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ের কাছে পণ্য বিক্রি অব্যাহত রাখবে। গত মাসে হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকের আগে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যবিরোধ নিষ্পত্তিতে আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন ট্রাম্প। বেইজিংয়ের সঙ্গে চুক্তির জন্য মুখিয়ে আছেন জানিয়ে বলেন, তিনি ও শি কোনো চুক্তিতে পৌঁছালে তা হবে চিরভাস্বর।
সম্মেলনের আলোচ্য সূচির বাইরে ট্রাম্প-শির বহুল আকাক্সিক্ষত এ বৈঠকের দিকেই সারাবিশ্বের নজর ছিল। এ বৈঠক থেকেই দেশ দুটির মধ্যকার উত্তেজনা নিরসন কিংবা বাণিজ্যবিরোধ আরও বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা ছিল পর্যবেক্ষকদের।
জাপানের পশ্চিমের শহর ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার ধারণা, আমরা খুব কাছাকাছি এসেছিলাম, তারপর কিছু একটা হলো আমরা একটু পিছিয়ে গেলাম; এখন আমরা আবার কাছাকাছি।’ বেইজিংয়ের সঙ্গে ন্যায্য যে কোনো বাণিজ্য চুক্তিই হবে ‘ঐতিহাসিক’। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস এ বৈঠকটি খুবই ফলপ্রসূ হবে; এবং আমরা এমন কিছু করব যা সত্যিকার অর্থেই চিরভাস্বর হবে।
বহুদিন ধরেই বৈরী সম্পর্কের মধ্যে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়। একে অন্যের ওপর কয়েক বিলিয়ন ডলার শুল্কারোপ করে বাণিজ্যযুদ্ধের দিকে এগিয়ে গেছে তারা। উভয় দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব বুঝতে পেরে এ বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানে আলোচনা শুরু করে দুদেশ। কিন্তু আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় ট্রাম্প শুল্ক বাড়িয়ে বাণিজ্যযুদ্ধ উসকে দিয়েছেন। কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই গত মাসে ১৩ দফার বাণিজ্য আলোচনা শেষ হয়।
দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ ব্যবসায়ী ও ক্রেতার মধ্যে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, তেমনি বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। কিছু মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতার জন্য শুল্ক বাড়ানোটা একটি ধাক্কার মতো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এশিয়ান ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ডেবোরাহ এলমস বলছেন, ‘এটি অর্থনীতিতে এক বড় ধাক্কা দিতে যাচ্ছে।’
