বাণিজ্য ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় অগ্রগতি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এর অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা বসেছে দেশ দুটির প্রতিনিধিরা। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে শুরু হওয়া এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে জোয়ার আমদানিতে অ্যান্টি-ডাপ্পিং শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্য ঘাটতি ২০০ বিলিয়ন ডলার কমাতে মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীনা কর্মকর্তারা। যদিও চীনার কর্মকর্তারা এ বিষয়টি অস্বিকার করেছেন। খবর বিবিসি, রয়টার্স।
ওয়াশিংটনে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুদিনের আলোচনায় চীনা প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রিমিয়ার লিয়ো হি। এছাড়া চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান ই গ্যাংও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন। বৈঠকের আগে আলোচনায় ইতিবাচক ফল পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দফায় একে অন্যের ওপর শুল্কারোপের হুমকি দিলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধাবস্থা শুরু হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুদেশ বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদল বৈইজিংয়ে আলোচনায় বসে। এতে সব বিষয়ে একমত না হতে পারলেও চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমেছে। বাকি বিষয়গুলো সমাধানে ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় দফায় আলোচনায় বসেছে দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
প্রতিবেদন মতে, ওয়াশিংটনের আলোচনায় সম্প্রতি আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ার আমদানিতে এন্টিডাম্পিং শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা জোয়ার জাতীয় শস্যের ওপর ১৭৮ দশমিক ছয় শতাংশ শুল্কারোপ করে চীন। গত মাসেই এ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এ শুল্ক তুলে নেওয়ায় আলোচনায় অগ্রগিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে যুক্তরাষ্টের কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্য ঘাটতি ২০০ বিলিয়ন ডলার কমাতে মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়াতে সম্মত হয়েছে চীনের কর্মকর্তারা। যদিও এ খবর প্রকাশের কিছু পরেই চীনের নেতাদের পক্ষ থেকে এ বিষটি অস্বীকার করা হয়েছে।

মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তথ্যমতে, চীনের সঙ্গে ২০১৬ সালে দেশটির পণ্য ও সেবা বাণিজ্য হয়েছে ৬৪৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে চীন দেশটিতে রফতানি করেছে ৪৭৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র চীনে রফতানি করেছে ১৬৯ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ওই বছর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের ঘোষণার পর থেকেই বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ট্রাম্প পাঁচ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দিলে পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দেয়। এরপর ট্রাম্প আরও ১০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দিলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়। যদিও এখন পর্যন্ত ওই শুল্ক কোনো দেশই আরোপ করেনি।