Print Date & Time : 23 July 2025 Wednesday 5:11 am

বাণিজ্য সামিটের মূল উদ্দেশ্য হোক বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ

বিনিয়োগ আকর্ষণ, ব্যবসার সম্ভাবনা তুলে ধরা ও সমস্যা উত্তরণে করণীয় খুঁজে বের করতে আগামী মাসের ১১ থেকে ১৩ তারিখ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ আয়োজন করতে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। তাই এ আয়োজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই আমরা মনে করি। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের সম্ভাবনাময় খাতের মধ্যে টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাবার, চামড়া, সিরামিক, পাট, হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন খাত ও পরিষেবা দেয়ার সুযোগ তুলে ধরা হবে।

বিনিয়োগ-উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা পর্যালোচনা করে করপোরেট ট্যাক্স, ভ্যাট কমানো, ক্ষেত্রে বিশেষ শতভাগ কর অব্যাহতি প্রদান, দ্রুত এক ছাদের নিচে সব সেবাদান করতে হবে। কভিড-পরবর্তী পরিবর্তিত বিশ্ব অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ কেন প্রয়োজন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে বাংলাদেশের অবস্থান সুবিধাজনক নয়।

প্রতিযোগী দেশগুলোর করপোরেট ট্যাক্স পর্যালোচনা করে বিনিয়োগের খাত ও বিনিয়োগের স্থান বিবেচনায় করপোরেট ট্যাক্স বর্তমানের ৩৫ শতাংশ থেকে যৌক্তিক ও ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনতে হবে। 

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অবশ্যই প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করহার হ্রাস করতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যেখানে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবন সেখানেই ব্যবসা করবেন। তা বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কর অবকাশ সুবিধা বাড়াতে হবে। যে বিনিয়োগকারীর প্রতিষ্ঠানে বেশি সংখ্যক স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলোকে জমি বরাদ্দ, কর অবকাশসহ কীভাবে বেশি সুযোগ দেয়া যায়, তা ভাবতে হবে।

কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আয়ের অভ্যন্তরীণ উৎস যথেষ্ট নয়। রাজস্ব ঘাটতি কিংবা অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মেটাতে সব দেশই প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) ও বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সহায়ক ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিনিয়োগ নীতিতে সংস্কারের আওতা বাড়াতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষার জন্য যথাসম্ভব দ্রুত দ্বিপক্ষীয়, বহুপক্ষীয়ও আঞ্চলিক চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ নিতে হবে। 

২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে উৎপাদনক্ষমতা উন্নীতকরণ ও বহুমুখীকরণে জাতীয় প্রচেষ্টার সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতাও বাড়াতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা প্রয়োজন। বিনিয়োগ বিকাশে প্রতিশ্রুতিশীল বিনিয়োগকারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আঞ্চলিক ও নিকটবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল শুরুর পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশে ব্যবসার সহজীকরণ সূচকে যেকোনো মূল্যে এগিয়ে আসতে হবে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট শিল্পে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে চাহিদার ভিত্তিতে পেশাভিত্তিক দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে কর্ম ও পেশার আদর্শমান এবং পাঠ্যক্রম প্রস্তুত করে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আসন্ন বাণিজ্য সামিটের মূল উদ্দেশ্য হোক বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ। এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।