প্রতিনিধি, বান্দরবান: প্রচণ্ড গরম ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গমাঞ্চলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। রেমাক্রি ইউনিয়নের বড়মদক এলাকায় পাতোয়া ম্রো, অংগ্যি খুমী ও ঙারেসা মুরতং (নারিচা) পাড়াসহ আশেপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোয় নতুন করে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেক নারী-পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারযোগে প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও চিকিৎসক পাঠিয়েছে। বড়মদক বিজিবি ক্যাম্পসহ পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের সদস্যরা আক্রান্ত পাড়াগুলোয় সেনাবাহিনীর ওষুধ সরবরাহ করছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, সাম্প্র্রতিক সময়ে বড়মদক এলাকার পাথোয়াই কারবারী পাড়ায় ১২ জন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে পুরুষ ছয়জন ও মহিলা ছয়জন। এছাড়া অংগী খুমী পাড়ায় ৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন ও মহিলা ১৯ জন। এছাড়া গত ২০ মে ওয়াংথং (৫৬) নামে একজনের মৃত্যুও হয় ডায়রিয়ায়।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টিতে পাহাড়ের ছড়া, খালের পানিতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। দূষিত পানি ব্যবহার ও অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে খাওয়া-দাওয়ার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে দুর্গম অঞ্চলের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। পাহাড়ি ছড়া-খালের দূষিত পানি পানের কারণে ডায়রিয়া ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বান্দরবান ৬৯ সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে সেনাবাহিনীর আলীকদম জোন ও বিজিবি ৫৭ ব্যাটেলিয়ানের তত্ত্বাবধানে গত সোমবার তিনটি পাড়ায় ওষুধ, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ চিকিৎসক টিম পাঠানো হয়েছে।
গতকালও মেডিকেল টিম আক্রান্ত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।
থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ জানান, প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসের দিকে দুর্গমাঞ্চলের গ্রামগুলোয় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। বড়মদক এলাকার কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবরে ঘটনাস্থলে ইতোমধ্যে মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও আক্রান্তদের চিকিৎসায় কাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বলা যায়।