র‌্যাব-সন্ত্রাসী গোলাগুলি

বান্দরবান সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ


প্রতিনিধি, বান্দরবান : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে র‌্যাবের সাথে মাদক চোরাকারবারি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এসময় র‌্যাবের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় সীমান্ত জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলেও। আজ মঙ্গলবার সীমান্ত পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সীমান্তবর্তী তুমব্রু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবাররাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মাদক বিরোধী যৌথ অভিযান চালায় র‌্যাব এবং ডিজিএফআই সদস্যরা । এসময় অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠনের মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সাথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় র‌্যাবের গোলাগুলি সংঘর্ষ হয়। এতে মাদক চোরাচালানকারীদের গুলিতে দায়িত্বরত অবস্থায় ডিজিএফআই একজন কর্মকর্তার (বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রুবেল বড়ুয়া নামে র‌্যাবের একজন সদস্যও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। হতাহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে গোলাগুলিতে কোনাপাড়া শূন্যরেখার আশ্রয়কেন্দ্রের সাজেদা নামে এক রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে স্থানীয় সূত্রে। ঘটনাস্থল থেকে মাদক চোরাকারবারি চক্রের ২ মূল হোতা’কে আটকের গুঞ্জনও শোনা গেছে। তবে সরকারি কোনো সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় র‌্যাব এবং ডিজিএফআই যৌথভাবে মাদক বিরোধী অভিযান চালায়। এসময় মাদক চোরাচালানকারীদের গুলিতে দায়িত্বরত অবস্থায় ডিজিএফআই একজন কর্মকর্তা শহীদ হন। তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। র‌্যাবের এক সদস্যও আহত হয়েছে।

এদিকে র‌্যাবের সাথে সশস্ত্র চোরাকারবারি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর গোলাগুলিতে তুমব্রু সীমান্ত এলাকাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টান্টু সাহা বলেন, যৌথ বাহিনীর সাথে সশস্ত্র চোরাকারবারি সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়েছে। সরকারী বাহিনীর একজন অফিসারের মৃত্যু হয়েছে। সীমান্ত এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হতাহতদের কক্সবাজার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানের খবরে সশস্ত্র চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের অস্ত্রধারীরা র‌্যাব বাহিনীকে টার্গেট করে গুলি ছূড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে দেড়ঘন্টার মত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দে কেঁপে উঠে ঘুমধুম ইউনিয়নের আশপাশের এলাকাগুলো। ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক নারীর মৃত্যুর খবর শোনেছি। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরও পেয়েছি। ঘটনার পর থেকে সীমান্ত জুড়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নিরাপত্তায় বিজিবি ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জনসাধারণের চলাচলে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।