Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 11:52 pm

বাস ট্রেন লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী অনুষ্ঠান-সমাবেশ বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে নতুন ধরন ওমিক্রনসহ কভিড-১৯-এর সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী ১৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে সারাদেশে আবারও বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯-এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব এবং দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নি¤œবর্ণিত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলোÑ

১. দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

৩. রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

৪. ১২ বছরের ঊর্ধ্বের সব ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না।

৫. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরগুলোয় স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টগুলোয় ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও আগত ট্রাকের সঙ্গে শুধু ড্রাইভার থাকতে পারবে, কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

৬. ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেকসংখ্যক যাত্রী নেয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে।

৭. বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কভিড-১৯ টিকা সনদ প্রদর্শন ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

৯. সর্বসাধারণের করোনার টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ নেবে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেবে।

১০. কভিড-আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উš§ুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

১১. কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

এ বিধিনিষেধ কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলেও লকডাউন দেয়ার পরিস্থিতি এখনও হয়নি।

ওই দিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সেখানে করোনা মোকাবিলায় নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বব্যাপী দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩০ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন।