Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 2:31 pm

‘বাহুবলী’ টমেটো চাষে বেশি লাভের আশা

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামের কৃষক অহিদুল ইসলামের উন্নত বাহুবলী জাতের টমেটো আবাদে মিলছে আশানুরূপ ফলন। তিনি এ টমেটো চাষাবাদে তাঁর ব্যয়ের তিন-চার গুণ বেশি লাভের আশা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অসুরখাই সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক অহিদুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি একজন জনপ্রতিনিধিও। কৃষক অহিদুল তার বাড়িসংলগ্ন ২০ শতক জমিতে উচ্চমূল্য ও নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী প্লটে উন্নত বাহুবলী জাতের টমেটো আবাদ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় ওই টমেটো আবাদ করা হয়েছে। উল্লিখিত প্রকল্প থেকে কৃষক অহিদুল ইসলামকে টমেটো চাষের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়। গেল ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর জমিতে ওই টমেটোর চারা রোপণ করেন তিনি। কৃষক অহিদুল ও তার পরিবারের সদস্যদের সার্বিক পরিচর্যায় এবং সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা ও তদারকিতে চারা রোপণের পর নির্দিষ্ট সময়ে টমেটো ক্ষেতে ফলন আসেন। বিপুলসংখ্যক টমেটো ধরে ক্ষেতের প্রতিটি গাছে। এরপর ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে গাছের টমেটোগুলো খাবার উপযোগী হয়ে ওঠে। সেই থেকে কৃষক অহিদুল প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে ক্ষেত থেকে টমেটো উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন। ক্ষেত থেকে ২০০ কেজিরও বেশি টমেটো মিলছে এক দিনেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কৃষক অহিদুলের ক্ষেত থেকে পরিবারের সদস্যরা টমেটো ছিঁড়ছেন। গাছ থেকে টমেটো ছিঁড়ে প্লাস্টিকের ক্যারেটে রাখা হচ্ছে। ওইদিন তার ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে সেসব ১১টি  প্লাস্টিকের ক্যারেটে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিটি ক্যারেটে ২১-২২ কেজি করে টমেটো রয়েছে। সে হিসাবে ওইদিন প্রায় ২৩০ থেকে ২৪০ কেজি পর্যন্ত টমেটো মিলেছে তার ক্ষেত থেকে।

কৃষক অহিদুল ইসলাম বলেন, টমেটো আবাদে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। কোনো রকম রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। আর পোকামাড়কের উপদ্রব থেকে টমেটো ক্ষেত বাঁচাতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। তার ২০ শতক জমিতে টমেটো চাষে ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার টমেটো বাজারে বিক্রি করেছেন ইতোমধ্যে। আর তার টমেটো ক্ষেত থেকে চলতি মার্চ ও আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত টমেটোর ফলন এবং  টমেটো আবাদের খরচের চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি টাকার টমেটো বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

সম্প্রতি কৃষক অহিদুলের টমেটো ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটিং ডিরেক্টর ড. মো. আব্দুস সালাম প্রমুখ।