নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচন করতে চায়, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের থেকে তারা সিদ্ধান্ত পায় না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখলে দলের মধ্যে বড় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী ২৭ জুলাই বিএনপি যে সমাবেশ ডেকেছে, একই দিনে আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠনও সমাবেশ ডেকেছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সংঘাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এমন কর্মসূচি ঘোষণ করেছে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যেদিন সমাবেশ ডাকবে, সেদিন এত বড় ঢাকা শহরে অন্য কেউ সমাবেশ ডাকতে পারবে না, এমন তো নিয়ম নেই। বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে জনগণ তখন আতঙ্কে থাকে। সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কিংবা এর সহযোগী সংগঠনগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা। এটা তাদের দায়িত্ব। সে কারণেই ২৭ জুলাই ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ যৌথভাবে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। আমরা কখনোই সংঘাত তৈরি করতে চাই না। কারণ আমরা সরকারে আছি। দেশে যদি কোনো সংঘাত সৃষ্টি হয়, তবে সরকারেরই বদনাম হয়। সুতরাং আমরা সংঘাত চাই না। বিএনপিই সংঘাত তৈরি করার অজুহাত খুঁজছে।
ড. হাছান বলেন, এর আগে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে তারা এবং আমরা বড় সমাবেশ করেছি। সেখানে কোনো সংঘাত হয়নি। সেখানে আমাদের দল সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাই বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পালন করুক। কিন্তু বিএনপি অতীতে যেহেতু মানুষের জানমাল এবং সম্পদের ক্ষতি করেছে, সেহেতু আমরা সরকারি দল হিসেবে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে মানুষের নিরাপত্তার জন্য একই দিনে সমাবেশ ডেকেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে কোনো সংকট নেই। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সংকট রয়েছে। তাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচন করতে চায়, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে তারা সিদ্ধান্ত পায় না। এটা একটি বড় সংকট। বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা নেতাকর্মীদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও করতে দেয় না। এমনকি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। এটি একটি দলের অভ্যন্তরীণ সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ। অথচ তারা গণমানুষের দল হিসেবে নিজেদের দাবি করে। কখন যে সেই দলের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে, সেটাই এখন সময়ের অপেক্ষা।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে এরই মধ্যে ছোটখাটো একটা বিস্ফোরণ অবশ্য ঘটেছে। কিছু নির্বাচনে তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ নির্বাচনে জয়ীও হয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখলে এর প্রভাব বিএনপির মধ্যেই পড়বে। শোকের মাসে জামায়াতের কর্মসূচির অনুমতির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিদ্ধান্ত দেবে। শোকের মাসের ভাবগাম্ভীর্যের বিষয়টি মাথায় রেখেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিদ্ধান্ত দেবে।