শ্রীমঙ্গলে ১৪তম চা নিলাম

বিক্রি হয়নি জালালাবাদ টি ব্রোকার্সের চা পাতা

প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্রে গতকাল বুধবার চলতি অর্থবছরের ১৪তম চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের চা নিলামে বৃন্দাবন চা বাগানের চা পাতা সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়, যার প্রতি কেজি বাজারমূল্য ছিল ২৭০ টাকা। এদিকে লুয়াইউনি হলিছড়া চা বাগানের গ্রিনটি সেটিও সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়, যার প্রতি কেজি বিক্রয় মূল্য ছিল এক হাজার ৫১০ টাকা।

গতকাল শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের অস্থায়ী অফিস জেলা পরিষদ মিলনায়তনের হলরুমে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। তবে নিলামের প্রথম ডাকে জালালাবাদ টি ব্রোকার্স লিমিটেডের চা পাতার কোয়ালিটি নি¤œমানের হওয়ায় তা বিক্রি হয়নি। তাছাড়া বায়াররা বলছেন, চায়ের উৎপাদন বাড়ছে, কিছু কিছু বাগানের চা পাতার কোয়ালিটিও আগের তুলনায় অনেক ভালো।

জানা যায়, শ্রীমঙ্গলের পাঁচটি ব্রোকার্স হাউসের মধ্যে সোনার বাংলা ব্রোকার্স হাউস নিলামে অংশগ্রহণ করেনি। তাছাড়া চারটি ব্রোকার্স হাউস মিলিয়ে প্রায় ৩৫ বায়ার নিলামে অংশগ্রহণ করেন। এতে ৭৯ হাজার ৩০৩ দশমিক ৬০ কেজি চা পাতা নিলামে ওঠে, যার বাজারমূল্য আনুমানিক এক কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ৭২০ টাকা।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর নিলামে ৯১ হাজার ৬০৪ দশমিক ১০ কেজি চা পাতা নিলামে ওঠে, যার বাজারমূল্য ছিল আনুমানিক এক কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ৮২০ টাকা।

মোস্তফা টি হাউসের স্বত্বাধিকারী আহমেদ এহসান সুমন শেয়ার বিজকে জানান, ‘আজকের ১৪তম নিলামে চায়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গত নিলাম থেকে এ নিলামে চায়ের মান মোটামুটি ভালো। গত নিলামে সর্বনি¤œ ১৬৫ টাকা ছিল। এ নিলামেও সর্বনি¤œ ১৬০-১৬৫ টাকার মধ্যে ছিল এবং ওপরে ৩০০ টাকার কাছাকাছি ছিল। তবে চায়ের মান বর্তমানে মোটামুটি ভালো পর্যায়ে রয়েছে এবং দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

হালিম টি সাপ্লাইয়ের স্বত্বাধিকারী জুয়েল আহমেদ শেয়ার বিজকে জানান, ‘বর্তমানে নভেম্বর মাস থেকে চায়ের গুণগত মান ভালো হচ্ছে, কিন্তু পরিমাণটা কমে গেছে। কম থাকার কারণে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএমএন ইসলাম (সৈয়দ মুনির) বলেন, ‘আজকের নিলামে চায়ের গুণগত মান ভালো ছিল। ভালো থাকার কারণে চায়ের বাজার ঊর্ধ্বগতি রয়েছে।’

এদিকে বাংলাদেশ চা বোর্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের চা-শিল্পে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৪ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন কেজি, অর্থাৎ এক কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যা অতীতের যে কোনো মাসের উৎপাদন রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

গত বছর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় ১৭ শতাংশ চা উৎপাদন বেশি হয়েছে। এর আগে মাসভিত্তিক উৎপাদনের সর্বশেষ রেকর্ড হয়েছিল গত বছরের ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে। গত অক্টোবরে ২০২১ সালে ১৪ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন কেজি, অর্থাৎ এক কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।