শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত অথচ আয়কর দেন না এমন বিদেশি কর্মীদের কাছ থেকে কর আদায়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর অংশ হিসেবে এনবিআরের টাস্কফোর্স সরেজমিন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের মাধ্যমে কর ফাঁকিবাজ বিদেশিদের চিহ্নিত করে করের আওতায় আনছে। ইতোমধ্যে এনবিআর সব কর অঞ্চলে চিঠি দিয়ে বিদেশি কর্মী কর্মরত, এমন প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছে। শিগগিরই এসব প্রতিষ্ঠানে জটিকা অভিযান চালানো হবে। বাসস।
এনবিআরের প্রথম সচিব (ট্যাক্স লিগ্যাল অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) আবুল কালাম আজাদ গতকাল বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকরা বিদেশে কাজ করতে গেলে আগে কর পরিশোধ করে কাজ করতে হয়। অথচ বাংলাদেশে উল্টো। বিদেশিরা কাজ করলেও অনেকে সঠিকভাবে কর দিচ্ছে না। তাই বিদেশিদের করজালের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অনিবন্ধিত ১৫ বিদেশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া কর অঞ্চলগুলোকে বিদেশি কর্মী আছেÑএমন প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিদেশি কর্মীদের ডেটাবেজ তৈরিতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একজন কমিশনারকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি নতুন উদ্যোমে কাজও শুরু করেছে। নিখুঁতভাবে ডেটাবেজের তৈরির জন্য পুলিশের বিশেষ শাখার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে। যাতে তাদের তথ্য পাওয়া যায়। তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ডেটাবেজ তৈরির কাজ শেষ হবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের কাছ থেকে সঠিকভাবে আয়কর আদায় করতে ২০১৬ সালে টাস্কফোর্স গঠন করে এনবিআর। এ টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), এসবি, ডিজিএফআই, এনএসআই, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেপজা, পাসপোর্ট অধিদফতর, এনজিও ব্যুরো ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদের রাখা হয়। পরে কাজের সুবিধার্থে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলভিত্তিক টাস্কফোর্সকে ভাগ করা হয়।
আবুল কালাম আজাদ জানান, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা বের করতে বর্তমানে একটি ডেটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। যেখানে বিদেশি কর্মীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, কর্মস্থলের ঠিকানা, বাংলাদেশে বসবাসের স্থায়ী ঠিকানা, কাজের ধরন, বেতন-ভাতাদির তথ্য ও আয়কর পরিশোধের তথ্য উল্লেখ থাকবে।
টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে গত বছরের জুলাই থেকে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও একটি স্থলবন্দরে আয়কর বুথ খুলেছে এনবিআর। ঢাকার হযরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের শাহ আমানত, সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরে আয়কর বুথে দায়িত্বে সহকারী কর কমিশনার পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের পদায়ন করা হয়েছে। এসব বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগের আগে অবশ্যই বিদেশিদের আয়কর প্রত্যয়নপত্র দেখাতে হচ্ছে। প্রত্যয়নপত্র দেখাতে না পারলে বিদেশ গমনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, অনেক বিদেশি নাগরিক ট্যুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশে করলেও পরে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার বিভিন্ন কোম্পানির ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আসা বিশেষ করে এনজিও, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, চিকিৎসা, গার্মেন্ট, মার্চেন্ডাইজিং, পরামর্শকসহ অন্য বিদেশিদের বেতন-ভাতা গোপন রাখা হচ্ছে।