Print Date & Time : 22 July 2025 Tuesday 11:25 pm

বিদেশে ছয় বছরে সাবেকভূমিমন্ত্রীর ৬২০ বাড়ি


নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ৪৮ লাখ ডলার (প্রায় পাঁচ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা) ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।


সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাহার ম্যানেজমেন্ট ইনকরপোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। একই বছর তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি ফ্ল্যাট কেনেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসা করার জন্য আমিরাতের দুবাইয়ে র‌্যাপিড র‌্যাপ্টর এফজিই ও জেবা ট্রেডিং এফজিই নামের দুটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরী স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরীর নামে আল-বারশা সাউথ-থার্ড এলাকায় কিউ গার্ডেনস ও বুটিক রেসিডেন্সে দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার দাম ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ দিরহাম (প্রায় সাত কোটি ৩১ লাখ টাকা)।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন বলে সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার (প্রায় পাঁচ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা)। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিজের ও স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ে আটটি প্রতিষ্ঠান খোলেন, যার স্থায়ী ও চলতি সম্পদের মূল্য ২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার ডলার (প্রায় দুই হাজার ৫৯১ কোটি টাকা)।


সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত যে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে, সেই তালিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের কারও নাম নেই। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যে সম্পদ বিবরণী জমা দেন, সেখানে তার বিদেশে থাকা সম্পদের কোনো তথ্য নেই। অর্থ পাচার ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুসারে এটি অপরাধ। তাই সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।