বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ান

ঢাকা শহরে মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের উন্নয়নে একটি প্রকল্প নেয় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। ‘ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের সম্প্রসারণ ও নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা’ শীর্ষক প্রকল্প নেয়া হয় ২০১৬ সালে। প্রকল্পের কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে মতিঝিল থেকে হাতিরঝিল ১৩২ কেভি ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন, সাবস্টেশন নির্মাণ ও কয়েকটি ভবনের পুরোনো বিদ্যুৎ লাইন পুনঃস্থাপন। যথাসময়ে কাজ শেষ হলে রাজধানীর বড় অংশে সব গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে, এটিই ছিল লক্ষ্য।

গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন উন্নয়ন: চীনা ঠিকাদার দক্ষ কর্মী নিয়োগ না দেয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত’ শীর্ষক প্রতিবেদন সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী বলেই ধারণা। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চুক্তি অনুযায়ী করা হয়নি ডিজাইন ও ড্রইং। ফলে প্রশ্ন উঠেছে প্রকল্পে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের তেবিয়ান ইলেকট্রিক অ্যাপারেটাস কোম্পানি লিমিটেডের (টিবিইএ) ব্যবস্থাপনা ও কর্মদক্ষতা নিয়ে। জানা গেছে, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী দক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়নি টিবিইএ। ফলে প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে ডিপিডিসি। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এমন তথ্য।

প্রকল্পে ধীরগতির কারণে সংশ্লিষ্টদের শিক্ষাগত ও পেশাগত অভিজ্ঞতার বিবরণ জানতে চেয়ে টিবিইএর কাছে চিঠি দেয় ডিপিডিসি। ওই চিঠির জবাব পর্যালোচনা করে ডিপিডিসি দেখতে পায়, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় যোগ্যতার কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়নি। সেই তালিকায় উল্লেখ করা কর্মিতালিকায় কার কী ঘাটতি, তা বর্ণনা করে দিয়েছে ডিপিডিসি।

সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী ডিজাইন ও ড্রইং না করা এবং চাহিদামতো পণ্য না দেয়া দুঃখজনক।চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বহীনতা দুই দেশের সরকারকেও বিব্রত করতে পারে। কেননা দুই সরকারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে চীনের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়।

ডিপিডিসি  রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সেবা দিয়ে থাকে। সংস্থাটির কাজ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্রাহক উপকৃত হবে, কিংবা তাদের ভোগান্তি কমবে, সেগুলোর একটি হলো ‘ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের সম্প্রসারণ ও নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা’ প্রকল্প। এখন এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতিতে নগরবাসীরই ভোগান্তি বাড়বে। বলা হয়ে থাকে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় সিস্টেম লস হয়। ডিপিডিসির কর্তাব্যক্তিরা জানেন, বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি) একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। ওই প্রকল্প দেরি হচ্ছে বলে আরও একটি ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। কিন্তু এটি সঠিক সমাধান নয়। তাই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য স্পষ্ট করতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগে ব্যবস্থা নেয়, সেজন্য তৎপরতা বাড়াতে হবে।