নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। অধিকাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। ফলে সার্বিক বাজারে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়লেও, অন্য খাতগুলোর বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। এর মাধ্যমে ডিএসইতে চার কার্যদিবস বাড়ার পর মূল্যসূচক কিছুটা কমল।
গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। কিন্তু প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। ভালো, মাঝারি, মন্দÑসব গ্রুপের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার তালিকায় চলে আসে। অবশ্য এর মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি; যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। এতে দিনের লেনদেন শেষে সার্বিক শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকা বড় হলেও অধিকাংশ বিমা কোম্পানির স্থান হয় দাম বাড়ার তালিকায়।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমে ১০১টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। মাঝারি মানের বা ‘বি’ গ্রুপের ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। আর কমেছে ৪১টি এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬টির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ১২টির কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। আর ‘জেড’ গ্রুপের ৯৭টি কোম্পানির মধ্যে ২৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৪৮টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
সব গ্রুপের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমার দিনে ডিএসইতে লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ১৪৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯০টির। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে বিমা খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৪৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ৮টির শেয়ার দাম কমেছে। বাকি একটির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সব গ্রুপের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৩৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এ লেনদেনে বড় ভূমিকা ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয় ১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার। ১১ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিলÑ শাইনপুকুর সিরামিক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, লাভেলো আইসক্রিম, লিন্ডে বাংলাদেশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো, কাট্টলী টেক্সটাইল এবং বিচ হ্যাচারি। অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ১৮১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।