শেয়ার বিজ ডেস্ক : সর্বশেষ নীতিনির্ধারণী বৈঠকে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। সবল অর্থনীতির ইঙ্গিত দিয়ে ফেড আগামীতে ধারাবাহিকভাবে সুদের হার বৃদ্ধির পথেই হাঁটবে বলে জানিয়েছে। এ খবরে ডলারের দাম বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে স্বর্ণের দামে। গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম কমে এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়। খবর: বিজনেস রেকর্ডার।
শুক্রবার স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ২০৭ ডলার ৭৮ সেন্টে। আগের দিনের তুলনায় এটি এক দশমিক তিন শতাংশ কম। গত ১১ অক্টোবরের পর এটিই ধাতুটির সবচেয়ে কম দাম। এছাড়া ভবিষ্যৎ সরবরাহের চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণের দাম কমেছে ১৬ ডলার পাঁচ সেন্ট বা এক দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ২০৮ ডলার ৬০ সেন্টে।
অর্থনীতি অব্যাহতভাবে সম্প্রসারিত হওয়ার কারণে সুদের হার চলতি বছর আরও একবার বৃদ্ধি করার প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেছে ফেড। তবে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার ঝুঁকির বিষয়টিও উল্লেখ করেছে ফেড।
সুদের হার বৃদ্ধি স্বর্ণের বাজারে দামে প্রভাব ফেলে। সাধারণত ডলারের মান যখন দুর্বল হয়ে ওঠে, তখন স্বর্ণসহ নির্ধারিত বিভিন্ন ধাতুতে বিনিয়োগ নিরাপদ বোধ করে বিনিয়োগকারীরা। ফলে ধাতুটির দাম বাড়ে। আর ডলার শক্ত অবস্থানে থাকলে স্বর্ণের দাম কমে। তাছাড়া রাজনৈতিক বা আর্থিক কোনো অস্থিরতা দেখা দিলেও এই পণ্যটির দর বাড়ে। কারণ এ সময় এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যায়। স্বর্ণকে তখন মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ ভাবে।
দু’দিনের নীতিনির্ধারণী বৈঠক শেষে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (এফএমওসি) সুদের হার দুই দশমিক ২৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দুই শতাংশের কাছাকাছি অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি।
এফএমওসির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কর্মসংস্থানে মসৃণ অগ্রগতির সঙ্গে অর্থনীতি শক্তিশালীভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। পাশাপাশি বেকারত্বের হার কমছে এবং গৃহস্থালি ব্যয়ও ‘শক্তিশালীভাবে’ বাড়ছে। তবে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি নিয়ে এফএমওসির ভাষায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। এফএমওসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বছরের শুরুর দিকে গতিশীলতার তুলনায় ব্যবসায় স্থির বিনিয়োগে নিয়ন্ত্রিত গতি দেখা গেছে।’
এফএমওসির এ মন্তব্যকে ফেডের সতর্ক পদক্ষেপে চলার একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হতে পারে। এছাড়া একে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৃষ্ট বাণিজ্য বিবাদের পরিণতি হিসেবেও দেখা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফেড অনেকবারই অতিরিক্ত শুল্কের কারণে ব্যয় বৃদ্ধিকে ব্যবসায় আস্থা ও বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছে।