জাবির হোসেইন: ফ্রেডি চ্যাং যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ফিন্যান্স ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার মেজর ছিল। সঙ্গত কারণে সে এখানে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে অনেক আনন্দিত। কিন্তু অচিরেই ফিলাডেলফিয়ার এ আইভি লিগ স্কুলে পড়ার আনন্দ ও সম্মান ম্লান হতে শুরু করে। অসচ্ছলতার কারণে তিনি কলেজে নিবন্ধনকরতে পারেননি।
বিজনেস ইনসাইডারকে চ্যাং জানায়, ‘আমি জানতাম, আমার পরিবার কোনোভাবেই প্রাইভেট আইভি লিগ ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে পারবে না’। তিনি ২০১৪ সালে পেনিসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। সুযোগ পাওয়ার পর শুরুতে খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলেন। কিন্তু তার উৎসাহে ভাটা পড়তে খুব বেশি সময় লাগলো না, যখন সে জানতে পারলো কলেজে পড়ার অর্থ জোগাড় করা তার সাধ্যের বাইরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার জন্য তাকে কমপক্ষে ৬৯,০০০ হাজার ডলার খরচ করতে হবে। টিউশন ফি বাবদ ৫১ হাজার ৪৬৪ ডলার। থাকা-খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ ১৮ হাজার ডলার।
এত টিউশন ফি কীভাবে জোগাবেন, তা বুঝে উঠতে পারেননি চ্যাং। এরপর তিনি নিউইয়র্কের নেক্সটজেনভেস্টের খবর পান। এ সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের জটিল অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে ছাত্রদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। তাদের মাধ্যমে চ্যাং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যান। তিনি যেন বিনা বেতনে পড়তে পারেন, সেজন্য যোগাযোগ করেন অধ্যাপকদের সঙ্গে।
এ ধরনের আবেদন প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভিন্ন হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদনপত্র ও তার কর প্রদানের ডকুমেন্টস ও কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সুপারিশের কপি জমা দেন। কর্তৃপক্ষ আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৪৯ হাজার ডলার মওকুফ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পড়ালেখার আরও একটা সুবিধা হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা যে কলেজে পড়াশোনার জন্য আবেদন করবে সেখানকার ঋঅঋঝঅ (Free Application for Federal Student Aid) এর অধীনে বৃত্তির জন্যও আবেদন করতে পারবে। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সরকারের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন করলে তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান। এ ব্যাপারে সরকার যদি সাহায্য না করে তাহলে তারা পড়াশোনা চালাতে পারবেন না।
কলেজ কাউন্সেলররা এই ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে চ্যাংকে ন্যূনতম ধারণাও দেয়নি। তিনি নেক্সটজেনভেস্টের মাধ্যমে তা জানতে পারেন। চ্যাং এখন নেক্সটজেনভেস্টেই কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের পরামর্শ প্রদান করেন।
‘কলেজ যখন কোনো শিক্ষার্থীর আবেদন গ্রহণ করে, তখন শুধু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সে চলে যাক এটা তারা কোনোভাবেই চান না। তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে শিক্ষার্থীকে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। যদিও সব কলেজ সমান নয়’ – চ্যাং বলেন।
সাংবাদিক