সেমিনারে বক্তারা

বিশ্বব্যাপী সংঘাত বিপর্যয় স্থানচ্যুতি বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী সংঘাত, বিপর্যয় এবং স্থানচ্যুতি বেড়েছে। মহামারি দ্বারা ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে ৮৯.৩ মিলিয়ন হয়েছে, ১৬১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি। ২০২১ সালে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার, এবং ২০২৩ সালে তা ৩৩৯ মিলিয়নে চলে যেতে পারে। ২০২১ সালে যে অর্থ সহায়তা পাওয়া যায়, তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অন্যদিকে মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ ৬৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার পুরো ব্যবস্থাপনাতেই কিছু দুর্বলতা প্রকট। লন্ডনভিত্তিক সংগঠন এএনএলএপির প্রতিনিধি জেনিফার ডোহার্টি ঢাকায় এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।

শনিবার অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে পাওয়া অপর্যাপ্ত অর্থ সহায়তায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। স্টেট অফ দ্য হিউম্যানিটারিয়ান সিস্টেম রিপোর্ট ২০২২: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক এই সেমিনারটি আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় ছিল লন্ডন ভিত্তিক সংস্থা এএনএলএপি।

সেমিনারের প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধ্বস মোকাবেলায় সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনভিত্তিক সংগঠন এএনএলএপির প্রতিনিধি জেনিফার ডোহার্টি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ গোয়েন লুইস, ব্রিটিশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর সাইমন লিভার এবং আইওএম বাংলাদেশে ডিপুটি চিফ অব মিশন নুসরাত গাজ্জালি।

বিশেষজ্ঞ বক্তার আলোচনা করেন, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর-অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কেএএম মোরশেদ, দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা, টিয়ারফান্ডের আঞ্চলিক পরিালক সঞ্জীব বানজা, স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের সাজিদ রহমান এবং এ আইডিমে-ইন্ডিয়ার মিহির ভাট। এতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। গোয়েন লুইস রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে সীমিত অর্থায়নের প্রভাব মোকাবেলায় কম খরচে যথাসম্ভব উত্তম সেবা প্রদানের উপর জোর দেন। সাইমন লিভার সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন। নুসরাত গাজালী কার্যকর মানবিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সু-সমন্বয়ের কথা বলেন। সঞ্জীব ভাঞ্জা বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ের প্রয়োজনকে অর্থ সহায়তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করার অন্যতম উপায় হিসেবে অভিহিত করেন। কে এ এম মোর্শেদ মানবিক কর্মসূচি প্রণয়নে বিশ্বকব্যাপ্যী স্বীকৃত সূচক প্রণয়নের কথা বলেন।

অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন এফএও-এর রাফায়েল স্টার্লিং, এনআরসি’র ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’শাবিরা নূপুর, এমএপি বাংলাদেশ-বরিশাল’র শুভঙ্কর চক্রবর্তী, রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন’র আকবর হোসেন, এনজিও প্লাটফরম’র আহসান উদ্দিন, জিবিএসএস’র মাসুদা ফারুক জিবিএসএস থেকে, হেল্প-কক্সবাজার’র আবুল কাশেম এবং পালস বাংলাদেশের সাইফুল ইসলাম কলিম।