# গত জুনে এনভিডিয়া স্বল্প সময়ের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির তকমা পায়
# চলতি মাসে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ
# শীর্ষস্থান নিয়ে এনভিডিয়া, মাইক্রোসফট ও অ্যাপলের লড়াই চলছে
শেয়ার বিজ ডেস্ক: অ্যাপলকে হটিয়ে আবার বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি হয়েছে এনভিডিয়া। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার তারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাজার মূলধনসম্পন্ন কোম্পানির স্বীকৃতি পায়। তবে এই অর্জন ছিল সাময়িক। খবর: রয়টার্স।
মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য তারা যে চিপ বানায়, সেই চিপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শুক্রবার কিছু সময়ের জন্য এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৫৩ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়। ওই সময় অ্যাপলের বাজার মূলধন ছিল ৩ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি ডলার। পরে শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় এনভিডিয়ার বাজার মূলধন ৩ দশমিক ৪৭ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৪৭ হাজার কোটি ডলারে নেমে আসে। একই সময়ে অ্যাপলের বাজার মূলধন ছিল ৩ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন ডলার বা ৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি ডলার।
এর আগে গত মঙ্গলবার এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম এযাবৎকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়। প্রসেসরের বাজারে আরও বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে তাইওয়ানের চিপ কোম্পানি টিএমএসসির মুনাফা ৫৪ শতাংশ বেড়েছে—এই বিষয়ও এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। একই সময়ে অ্যাপলের স্মার্টফোনের চাহিদায় টান পড়েছে। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে চীনে আইফোনের বিক্রি কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ একই সময়ে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ের ফোন বিক্রি বেড়েছে ৪২ শতাংশ। তা সত্ত্বেও অ্যাপল এখনো বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি। আজ শনিবার সকালের হিসাবেও দেখা গেছে, অ্যাপল এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি।
চলতি বছরের জুনেও এনভিডিয়া স্বল্প সময়ের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির তকমা পায়। এরপর সেই তকমা নেয় মাইক্রোসফট ও অ্যাপল। মূলত এই তিন কোম্পানির মধ্যে এখন জোর লড়াই চলছে। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের বাজার মূলধন কিছুটা কমে গেছে। ফলে এনভিডিয়া ও অ্যাপলের সঙ্গে মাইক্রোসফটের ব্যবধান বেড়েছে। গতকাল মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে; বাজার মূলধন ছিল ৩ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ১৮ হাজার কোটি ডলার।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির জন্য যে প্রসেসর প্রয়োজন হয়, সেই প্রসেসরের মূল জোগানদাতা হলো এনভিডিয়া।
মাইক্রোসফট, মেটা ও অ্যালফাবেটের মতো মহিরুহ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক কম্পিউটিং সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে; এই কোম্পানিগুলো এআইভিত্তিক সেবা ও পণ্য নিয়ে আসছে। এসব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে এনভিডিয়ার প্রসেসর। প্রসেসরের জগতে আরও কিছু কোম্পানি রয়েছে। কিন্তু বাজার-বিশ্লেষকরা বলেন, এনভিডিয়ার প্রসেসরের মান অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে ভালো। সে কারণে তারা প্রসেসর সরবরাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, তা থেকে সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে এনভিডিয়া।
গত ফেব্রুয়ারিতে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। এক লাখ কোটি ডলার থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র নয় মাস। সেখান থেকে তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে মাত্র তিন মাসের বেশি কিছু সময়। এখন তা সাড়ে তিন লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
১৯৯০-এর দশকে যাত্রা শুরু করা এনভিডিয়া একসময় ভিডিও গেমসের প্রসেসর তৈরি করত। চলতি মাসে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ। সম্প্রতি চ্যাটজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই এনভিডিয়ায় ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়ার পর চলতি মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর আবারও বেড়েছে।