শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনের রিয়েল এস্টেটে নতুন করে ক্র্যাকডাউন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভাকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার বিশ্ব পুঁজিবাজারে শেয়ারসূচক এক মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে গেছে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্টক মার্কেটে শেয়ারসূচক দুই মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ স্তরে নেমে গেছে। এশিয়ার পুঁজিবাজারেও গতকাল ব্যাপক পতন হয়েছে। খবর: আরব নিউজ, রয়টার্স, ব্ল–মবার্গ।
চলতি সপ্তাহে চীনের কর্তৃপক্ষ দেশীয় একটি আবাসন কোম্পানির ওপর নতুন করে ক্র্যাকডাউন আরোপ করে। রিয়েল এস্টেট গ্রুপ এভারগ্রান্ডের ঋণ-সংক্রান্ত ক্র্যাকডাউন আরোপ করা হয়। ফলে গতকাল হংকং স্টকে কোম্পানিটির শেয়ারসূচক ১১ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যয়ে নেমে যায়।
আর আগামী বুধবার ফেডের শীর্ষ বৈঠককে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগের সঙ্গে বিনিয়োগ কমিয়ে দেন। ফলে বিশ্ব পুঁজিবাজারে এর প্রভাব পড়ে। সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ইউরোপীয় পুঁজিবাজারে।
ইউরোপীয় পুঁজিবাজারে দ্য স্টক্স ইউরোপ ৬০০ সূচকে গতকাল দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা গত ২১ জুলাই থেকে দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত কয়েক দিনে জার্মানি ডিএএক্স সূচক ব্যাংক ও পরিবহন খাতে বৃদ্ধির পর গতকাল দুই দশমিক তিন শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে ইউরোপীয় পুঁজিবাজারে প্রায় সব কোম্পানি, যেমন খনি খাতে সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর হ্রাস পেয়েছে, যা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সর্বনিম্ন। আর ইস্পাত ও মেটাল খাতের শেয়ারদরও হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে অ্যাংলো আমেরিকান পিএসি, রিও টিনটো পিএলসি ও গ্লিনকোর পিএলসির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল।
রিয়েল এস্টেটে চীনের খড়্গহস্তের কারণে হংকং স্টকে বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগে ছিলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন ফেড বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হচ্ছে কভিড-১৯-এর প্রণোদনার বিষয়ে, তা নিয়েও উদ্বেগে ছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে স্টেট স্ট্রিট ইএমইএ’র প্রধান বিনিয়োগ কৌশলী ও গবেষক আলতাফ কাসেম বলেন, রিয়েল এস্টেটে চীনের (খারাপ) মানসিকতা ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে পুঁজিবাজারে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে ফেডের বৈঠকের পর মূল্যস্ফীতি নিয়ে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে জাপানে গতকাল স্টক মার্কেট বন্ধ ছিল। এশিয়ার চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যেও স্থবিরতা ছিল। আর কানাডা ও জার্মানির জাতীয় নির্বাচনের কারণে চলতি সপ্তাহে বাজার উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে।
চীনের কর্তৃপক্ষের খড়গহস্তের কারণে হংকং স্টকে এভারগ্র্যান্ডের শেয়ার সূচক আগের দিনের ১৯ শতাংশের পর গতকালও ১২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এভারগ্র্যান্ড কর্তৃপক্ষের ৩০৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি চীনের কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর ক্র্যাকডাউনের জেরে এভারগ্র্যান্ডের খড়্গহস্তের দরুন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশি উদ্বেগ দেখা দেয়।
আর চীনের হ্যাং সেং স্টকে গতকাল শেয়ারসূচক তিন দশমিক তিন শতাংশ পড়েছে, যেখানে সিঙ্গাপুরের এফটিএসই চীনা ফিচার পড়েছে তিন শতাংশ।
জাপানের বাইরে এমএসসিআই’স ব্রডেস্ট সূচক হ্রাস পেয়েছে এক দশমিক সাত শতাংশ, যা গত ২৪ আগস্ট থেকে সর্বনিম্ন।
এমএসসিআই’স অল কান্ট্রি ওয়ার্ল£ সূচক হ্রাস পেয়েছে শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ। আর অস্ট্রেলিয়ার পুঁজিবাজারে দুই দশমিক এক শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।