বিশ্ব বাজারে আরো কমল স্বর্ণের দাম

শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিশ্ব অর্থবাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্বর্ণের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক উত্তেজনা কমার পাশাপাশি, মুদ্রাস্ফীতির নতুন তথ্যের জন্য বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ও ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। এসব কারণে স্বর্ণের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দৃশ্যমান হচ্ছে, যা আগামী দিনে আর্থিক নীতির ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স

টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির প্রভাবে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কিছুটা সরে গেছে মূল্যবান ধাতুটির দিক থেকে। আগামী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি তথ্য প্রকাশিত হবে, যা মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে, এই প্রত্যাশায় বাজারে রয়েছে বাড়তি সতর্কতা।

আজ শুক্রবার (২৭ জুন) (জিএমটি সকাল ২:৩৪) স্পট গোল্ডের দাম ০.৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৩,৩১৩.২৩ ডলারে। সপ্তাহজুড়ে এটি কমেছে প্রায় ১.৭ শতাংশ। মার্কিন ফিউচার মার্কেটেও স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩২৫.৭০ ডলারে, যা ০.৭ শতাংশ পতন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সাময়িক শান্তি ফিরে আসায় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা নির্ভার। সিঙ্গাপুরের গোল্ডসিলভার সেন্ট্রালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রায়ান ল্যান বলেন, ‘ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতি স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলেছে। এখন বাজার কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতায় রয়েছে।’

এদিকে, ডলারের দাম ০.২ শতাংশ বেড়েছে, ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার-নির্ভর স্বর্ণ কিনতে বেশি খরচ হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের।

বিশ্ববাজারের নজর এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় সূচকের দিকে, যা প্রকাশিত হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যায়। রয়টার্সের জরিপ বলছে, এ সূচক মাসিক ভিত্তিতে ০.১ শতাংশ এবং বার্ষিক ভিত্তিতে ২.৬ শতাংশ বাড়তে পারে।

বাজার বর্তমানে আশা করছে, সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের মধ্যে ফেড সুদের হার ৬৩ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমাতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র দুইজন ফেড পলিসিমেকার জুলাই বৈঠকে সুদের হার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।

এর মধ্যেই কিছু বিনিয়োগকারী স্বর্ণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এবং ঝুঁকছেন অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দিকে। বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মেইয়ার বলেন, ‘সম্ভবত কিছু বিনিয়োগ এখন স্বর্ণ থেকে ঘুরে প্ল্যাটিনাম ও প্যালেডিয়ামের দিকে যাচ্ছে।’

এদিন স্পট সিলভার অপরিবর্তিত থেকে দাঁড়ায় প্রতি আউন্সে ৩৬.৬৩ ডলারে। তবে প্ল্যাটিনামের দাম ১.৮ শতাংশ কমে হয়েছে ১ হাজার ৩৯১.২৮ ডলার, যা ছিল ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অপরদিকে, প্যালেডিয়াম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৪৭.৭৮ ডলারে, যা অক্টোবর ২০২৪ সালের পর সর্বোচ্চ।