বিস্কুট প্রস্তুতকারক অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালে। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিস্কুট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। বিপণনেও এগিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গুণগত মানই এ প্রতিষ্ঠানকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে।

বেঙ্গল কারবাইড লিমিটেড নামে যাত্রা করেছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাটারি প্রস্তুত করতো প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৮২ সালে ব্যাটারি উৎপাদন শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যে গ্রাহকের আস্থা ও সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয় তারা। এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে বাজারে আসার পরিকল্পনা করে। বিস্কুট ও অন্য কনফেকশনারী আইটেমের বাজার নিয়ে গবেষণা শুরু করে।

বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিস্কুট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অলিম্পিক। প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয়ের ৯৫ শতাংশ আসে বিস্কুটসহ অন্য কনফেকশনারি পণ্য থেকে। ১৯৮৪ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৮৭ সালে সয়াবিন তেল ও ঘি প্রস্তুত শুরু করে। পাম অয়েল উৎপাদন শুরু করে ১৯৯১ সালে। ১৯৯৫ সালে আরও বৃহৎ পরিসরে ইউএম-থ্রি ব্যাটারি প্রস্তুতে মনোযোগী হয়। ১৯৯৬ সালে নাম পরিবর্তন করে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ নামে পথচলা শুরু তাদের। সেই একই বছর বিস্কুট ও অন্য কনফেকশনারি পণ্য প্রস্তুত শুরু করে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৯৮ সালে বল পয়েন্ট কলম ও বাল্ব উৎপাদন করে তারা।

২০০৩ সালে বিস্কুট উৎপাদনের জন্য দ্বিতীয় লাইন চালু করে, ২০০৮ সালে তৃতীয়টি। ২০০৮ সালটি তাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ওই বছর অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভূত হয় তৃপ্তি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ২০১০ সালে চতুর্থ বিস্কুট লাইন চালু করে। ২০১২ সালে পঞ্চমটি। ২০১৪ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম লাইন নিয়ে উৎপাদনে আসে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০১৫ সালে চালু হয় অষ্টম লাইনটি। গত বছর লোলাতির কারখানায় নতুন বিস্কুট লাইন স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। এ বছর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার লোলাতিতে নবম বিস্কুট লাইন উদ্বোধন করা হয়। নতুন লাইনের মধ্য দিয়ে তাদের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ২০০ টন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে তিনটি কনফেকশনারি লাইন ও একটি বেকারি লাইন রয়েছে।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের খাদ্যপণ্য স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। খেতে দারুণ। কর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মী নিয়োগে নারীদের প্রাধান্য দেয়।

২০১০ সালে এইচএসিসিপি সনদ পায় অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০১০-১১ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেরা ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার অর্জন করে। শুরু থেকেই ভোক্তা সাধারণকে বিস্কুট খাওয়ায় নতুন স্বাদ ও চমৎকার অনুভূতি উপহার দেওয়ার চেষ্টা করে আসছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। বাংলাদেশে প্রথম মালাই ক্রিম স্বাদের বিস্কুট এনেছে তারা। স্বাদের পাশাপাশি আকর্ষণীয় মোড়কও নজর কেড়েছে ভোক্তাদের। বিস্কুট উৎপাদন ও প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর স্ট্যান্ডার্ড (আইএসও) ২২০০০ সনদ অর্জন করেছে। ভোক্তাদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে সুগার ফ্রি বিস্কুট এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাছাইকৃত গমের আটা থেকে উৎপাদন করে বিস্কুটটির গুণ বজায় রেখেছে তারা। এ ধরনের বিস্কুটে কোনো কোলেস্টেরল নেই। ফলে রক্তে দ্রুত সুগার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। স্বাস্থ্য সচেতন ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফ্রেশ ও মচমচে স্বাদের সুগার ফ্রি বিস্কুটটি খেতে মজা।

ব্র্যান্ড

 

বিস্কুটÑএনার্জি প্লাস, নাটি, টিপ, মিল্ক প্লাস, কোকোনাট প্লাস, চকোলেট প্লাস, এলাচি প্লাস, সল্টেজ, কোকোনাট, ফার্স্ট চয়েস, জিরা, ক্রাক জ্যাক, ডাইজেসটিভ, বাটার বাইট, লাইট বাইট সুগার ফ্রি, চকো ফেস্ট, টুইংকেল টুইংকেল, টিম টিম, এনার্জি প্লাস মালাই ক্রিম, ম্যাজিক মিল্ক, নিউ গ্লুকোজ, একো এলাচি, একো মিল্ক, জি-অরেঞ্জ,

জি-এলাচি, লেক্সাস, হাইলাক্স, ফেস্টি কফি, নিউট্রি মেরি, মেরি গোল্ড, মিল্ক মেরি, চকো মেরি ও নামকিস

কুকিজ অ্যান্ড বেকারিÑড্রাই কেক, বাদামি কুকিজ ও ডেইলি টোস্ট

কনফেকশনারিÑজুসি লিচি, গ্রিন ম্যাঙ্গো, পাইন অ্যাপেল, রাইপ ম্যাঙ্গো, জুসি অরেঞ্জ, তেঁতুল ক্যান্ডি, ঝাল তেঁতুল, টেস্টি মিল্ক, ক্রিমি ক্যারামেল, কুল, এনার্জি, একলেয়ার ও চকিটো

ব্যাটারি অলিম্পিক গোল্ড (ইউএম ১ ও ৩), অলিম্পিক সুপার পাওয়ার (ইউএম ১), অলিম্পিক লেজার (ইউএম ৩), অলিম্পিক (ইউএম ৩ ও ৪), অলিম্পিক রিমোট (ইউএম ৪) ও অলিম্পিক হেভি ডিউটি (ইউএম ৪)