শেয়ার বিজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে পটুয়াখালী ও মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েন এলাকার হাজারো মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ
পটুয়াখালী: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল ক্রমেই উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী। এতে উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ নয়ার চর এলাকায় গ্রাম রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করে গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। এতে বউবাজার, নয়ার চর, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, উত্তর চরমোন্তাজ, মোল্লাগ্রাম ও চর আণ্ডাসহ ২০ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলায় এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে দেড় কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দুর্যোগের সময় জরুরি ভাঙন মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, চালিতাবুনিয়ায় আগেই বেড়িবাঁধ ভাঙা ছিল। কিন্তু আজ জোয়ারের পানিতে চরমোন্তাজের অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা পানি বন্দিদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করছি।
কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভোর থেকে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে দমকা হাওয়ার পাশাপাশি গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ ছাড়া নদীতে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মহেশখালীর চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গতকাল রোববার বেলা ২টায় মহেশখালী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে সিকদার পাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা-কবলিত এলাকার মানুষ। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী মূল বাঁধের বেশ কিছু এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পাড়ের মানুষ। এ অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় একটানা মেরামতের কাজ করছেন শ্রমিকরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদ মিয়া। তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভোর থেকে মহেশখালীতে দমকা হাওয়ার পাশাপাশি গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মহেশখালী বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। তাদের সহায়তায় আমাদের পৌরসভার লোক কাজ করছে।
মহেশখালীর বাসিন্দা রাজেন সালেহ বলেন, কোহেলিয়া নদীর পাশে যে বেড়িবাঁধটি আছে সেটি ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আরও কয়েকটি জায়গায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীকি চাকমা বলেন, বেড়িবাঁধের অনেক জায়গা ভেঙে গেছে। পানি কমলে তা মেরামত করা হবে।