বেড়েছে এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে গত এক দিনে মারা যাওয়া কভিড রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমে এলেও দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সাড়ে ২৬ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৭১০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জন কভিড রোগীর।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ১৭ হাজার ১৬৬ ৪৫৬ জনে। আর তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৬২৮ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা আগের দিন ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ ছিল।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে দুই হাজার ৪৩০ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ৭০ জনের।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৬৬৭ জনের মধ্যে কভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। যে ৬১ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ১৭ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সরকারি হিসেবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন চার হাজার ১২৪ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৭ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

বাংলাদেশে কভিডের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছর ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করে এসে ৩১ আগস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ আগস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে কভিডে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২২ কোটি ছয় লাখের বেশি রোগী।

মহামারির দেড় বছরে সবচেয়ে বাজে সময়টা বাংলাদেশ পার করেছে এ বছর জুলাইয়ে। কভিডের ডেল্টা ধরনের দাপটে ওই এক মাসেই তিন লাখ ৩৬ হাজার রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ছয় হাজার ১৭৬ জনের।

গত বছর মার্চে মহামারি শুরুর পর আর কোনো মাসে এত বেশি আক্রান্ত বা মৃত্যু বাংলাদেশকে দেখতে হয়নি।

আগস্টের শুরু থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই ধীরে ধীরে কমে আসছে। সেপ্টেম্বরে তা আরও কমছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের কভিড পরিস্থিতির সাপ্তাহিক যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে গত এক সপ্তাহে (৩০ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর) দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় (২৩ থেকে ২৯ আগস্ট) ৩৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমেছে; মৃত্যু কমেছে ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহে মোট ২০ হাজার ৯১৯ জনের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ৫৪৮ জনের। তার আগের সপ্তাহে ৩১ হাজার ৫৩৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মারা গিয়েছিল ৭৩৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৭ হাজার ৫৪৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯০ লাখ ৯১ হাজার ৬১০টি নমুনা।

এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ; মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৬ শতাংশ।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৭ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩ জন বাদে রাজশাহী বিভাগের ছয়, খুলনা বিভাগের ১০, বরিশাল বিভাগের তিন, সিলেট বিভাগের ১০, রংপুর বিভাগের চার ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা দুজন।

মৃত ৬৫ জনের মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, সাতজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, তিনজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল। তাদের মধ্যে ৫৩ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ১২ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।