নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে দাম বেড়েছে চাল, ডাল, ডিম, আটা ও সবজির। অন্যদিকে ইলিশ ধরা পড়লেও সব ধরনের মাছের দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা। এদিকে বেড়েছে খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি খাসির মাংসে দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘোরার সময় এসব চিত্র উঠে এসেছে।
সরেজমিনে গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা দাম বেড়েছে। আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে শিমের কেজি ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ৯০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৬০-৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, পটোল ৬০, ঢেঁড়স ৭০, কচুর লতি ৮০, পেঁপে ৫০, বরবটি ৮০ ও ধুন্দুল প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুরের ১১ নম্বর বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। এছাড়া কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়। সবজি বিক্রেতা মো. সামাদ হোসেন বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কম। সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম কমে যাবে।
বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। এসব বাজারে রসুনের কেজি ৪০-৪৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আদা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজি ১০৫-১১০ টাকা আর প্যাকেট চিনি প্রতি কেজি ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেড়েছে আটার দাম। খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা এবং প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আটা বিক্রেতা আইনাল হোসেন বলেন, হঠাৎ করেই বাড়ল আটার দাম। আরও দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।
এসব বাজারে দেশি মসুরের ডালের দাম বেড়েছে, কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে মসুরের ডালের কেজি ছিল ১৪০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ টাকা। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকায়। বাজারে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮ টাকায়।
এদিকে ছুটির দিনে ঊর্ধ্বমুখী খাসির মাংসের বাজার। গত সপ্তাহে ৯০০ টাকা করে বিক্রি হওয়া খাসির মাংস আজ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যাও কমেছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিক্রেতা হাসিবুর মোল্লা বলেন, ১০ কেজির একটি খাসি কিনতে গেলে দাম রাখা হচ্ছে ১১-১২ হাজার টাকা, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া ক্রেতাও অনেক কমে গেছে। সব মিলিয়ে দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই।
খাসির মাংস কিনতে আসা মারিয়া আফসান বলেন, খাসির মাংস কিনতে এসে দেখি এক হাজার টাকা কেজি। এত দাম হবে কল্পনাও করিনি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে খাসির মাংস খাওয়ার ইচ্ছা ছেড়ে দিতে হবে।
গত সপ্তাহের মতোই আজ বাজারে এক কেজি ফার্মের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। এছাড়া দাম কমেছে দেশি ও পাকিস্তানি লাল মুরগির। গত সপ্তাহে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পাকিস্তানি লাল মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি মুরগির দাম ৪০০-৪৫০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০০-৫২০ টাকায়।
টাউন হল বাজারের মুরগি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, দেশি মুরগির তুলনায় ফার্মের মুরগি বেশি বিক্রি হয়। দাম আগের সপ্তাহের মতোই আছে। তবে আগের তুলনায় অন্যান্য মুরগির বিক্রি কমেছে।
আকবর হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, দেশি মুরগি কেনার ইচ্ছা থাকলেও এখনও দাম বেশি। তাই ফার্মের মুরগি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। তবে এর দামও বাড়তি। কয়েক দিন পর হয়তো ২০০ করে কিনতে হবে।
এদিকে কয়েক মাস ধরে বাজারে গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, দাম এক জায়গায় থাকলেও বিক্রি কম। আগে প্রতি শুক্রবার তিন-চারটা গরু বিক্রি করতাম, সেখানে এখন একটা করছি।