বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে নতুন দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক ১১ জন প্রিন্স, চারজন মন্ত্রী ও ডজনখানেক সাবেক মন্ত্রীকে আটকের প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে দুবছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।

লন্ডন ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে গতকাল ব্রেন্টের ব্যারেলপ্রতি দাম বেড়েছে দশমিক আট শতাংশ। এদিন বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬২ ডলার ৫৫ সেন্টে, যা ২০১৫ সালের জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।

অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে গতকাল ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ২০ সেন্ট। সর্বশেষ লেনদেনে এ বাজারে পণ্যটির দাম প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয় ৫৫ ডলার ৯১ সেন্টে।

সম্প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে নতুন একটি দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়। এরএর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার ১১ প্রিন্স, চার মন্ত্রী ও ডজনখানেক সাবেক মন্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া দুজন মন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে সৌদি রাজপরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও রয়েছেন।

আটকদের মধ্যে সৌদি আরবের ধনকুবের প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালাল আছেন বলে জানা গেছে। ঠিক কোন দুর্নীতির অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে, সে বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রভাব আরও সুসংহত করা হলো বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

মোহাম্মদ বিন সালমানের বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজার। গত শুক্রবারই প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ৬০ ডলার ছাড়িয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যালেঞ্জ সত্তে¡ও জ্বালানি তেলের বাজারে ভারসাম্য পুনরুদ্ধার একটি সফলতা। আর এটি সম্ভব হয়েছে তেল উত্তোলনের বিষয়ে সৌদি যুবরাজের প্রস্তাব ও পদক্ষেপের কারণে।

সম্প্রতি এক বিনিয়োগ সম্মেলনে যুবরাজ জানান, জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। তবে তিনি প্রথাগত ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার আশ্বাস দান করেন।

ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকভুক্ত ও ওপেকের বাইরের সব রাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ সৌদি আরব।

আগামী মাসে ভিয়েনায় বিশ্বের দুটি বৃহৎ তেল রফতানিকারক দেশগুলোর নেতাদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই বৈঠকে তেলের উৎপাদন হ্রাস চুক্তি সম্প্রসারণের বিষয়েও কথা হতে পারে। কারণ কিছুদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুবরাজকে তেল উৎপাদন কম রাখার চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন। সে কারণেই তিনি ওই চুক্তিটি ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করতে চান।

যুবরাজ বলেন, আমরা ঐতিহাসিক চুক্তিটিতে সফল হয়েছি। বিশ্বের সবাইকে এ চুক্তি ও তেলের দামের ভারসাম্য অনুধাবন করতে সব সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।