নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদকর্মী একেএম শরীফুল ইসলামের বন্ধু মালয়েশিয়া থেকে ৩৮ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। রেমিট্যান্সের ওই টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক শরীফুলকে মূল টাকার সঙ্গে প্রণোদনা বাবদ আরও ৭৬০ টাকা পরিশোধ করেছে। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের গ্রিন রোড করপোরেট শাখা থেকে রেমিট্যান্সের টাকা তোলেন ওই গ্রাহক।
রেমিট্যান্স আহরণের ওপর সরকার ঘোষিত দুই শতাংশ প্রণোদনা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একই পোস্ট দেন শরীফুল ইসলাম। নিজের ফেসবুক ওয়ালে শরীফুল লেখেন, ‘বৈধপথে রেমিট্যান্স আসবেই। জয়তু শেখ হাসিনা সরকার।’
শরীফুল ইসলামের মতো গ্রাহকদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে প্রণোদনার টাকা প্রদানের বিষয়টি জানিয়ে একটি রসিদও দিয়েছে জনতা ব্যাংক।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে দুই শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা দেয় সরকার। এ লক্ষ্যে গত আগস্টে রেমিট্যান্সের প্রণোদনার টাকা ছাড় করা-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনাও ব্যাংকগুলোকে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের প্রণোদনা বাবদ তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা খরচের প্রক্ষেপণ রয়েছে সরকারের।
তবে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোর পদ্ধতিগত উন্নয়নসাধনে সময় লেগে যায় প্রায় সাড়ে তিন মাস। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থবছরের দুই ত্রৈমাসিকের প্রণোদনার জন্য এক হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে ছাড় করে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ৭ অক্টোবর ওই টাকা রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংকগুলোর অনুকূলে ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর থেকে রেমিট্যান্সের বিপরীতে দুই শতাংশ প্রণোদনার টাকা ছাড় করতে শুরু করে ব্যাংকগুলো।
প্রণোদনা দেওয়ায় চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স অনেকটা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছর দুই হাজার কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসবে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এ সময়ে ৪৫১ কোটি আট লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩৮৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। চলতি অক্টোবর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার।