বৈশ্বিক উষ্ণতায় ১০ বছরে হারিয়েছে ১৪ শতাংশ প্রবাল

শেয়ার বিজ ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত ১০ বছরে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সমুদ্রের ১৪ শতাংশ প্রবাল প্রাচীর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ উষ্ণতার প্রভাবে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশের বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবে উষ্ণতা বাড়তে থাকলে গভীর সমুদ্রের তাৎপর্যপূর্ণ প্রবাল প্রাচীর আরও ক্ষতিতে পড়বে। সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় বৈশ্বিক উষ্ণতার এ নেতিবাচক প্রভাবের চিত্র উঠে এসেছে। খবর: আল জাজিরা।

গেøাবাল কোরাল রিফ মনিটরিং নেটওয়ার্কের তিন শতাধিক বিজ্ঞানী প্রবালের আবাসস্থল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গবেষণার পর গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তারা জানান, উষ্ণতার প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়া, আরব উপদ্বীপ ও অস্ট্রেলিয়া উপক‚ল এবং প্রশান্ত মহাসাগরের প্রবাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, গবেষণায় ৪০ বছরের তথ্য-উপাত্ত, ৭৩টি দেশ এবং ১২ হাজার অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গবেষণার পর যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, ১১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার (৪,৫১৭ মাইল) প্রবাল প্রাচীর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বৃদ্ধি আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ মহামারির কবলে পড়েছে প্রবাল জগৎ। এভাবে উষ্ণতা বাড়তে থাকলে গভীর সমুদ্রের তাৎপর্যপূর্ণ প্রবাল প্রাচীর আরও ক্ষতিতে পড়বে।

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের প্রধান নির্বাহী পল হার্ডিস্টি এক বিবৃতিতে বলেন, পৃথিবীর প্রবাল প্রাচীরের জন্য জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন বড় ধরনের হুমকি।

প্রবাল প্রাচীরগুলো সমুদ্রের তলদেশের মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশজুড়ে রয়েছে, তবে এগুলো সমস্ত সামুদ্রিক প্রাণী এবং উদ্ভিদের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশের বাসস্থান। নিসর্গের সৌন্দর্যে যেমন ভিন্নমাত্রা যুক্ত করে আণুবীক্ষণিক প্রাণীটি, ঠিক তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা আর সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের খাদ্য হিসেবেও প্রবাল গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ১০টি প্রবাল প্রাচীর বহনকারী এলাকায় প্রবাল নিঃশেষ হওয়ার পেছনে প্রবাল ব্লিচিং, অতিরিক্ত মাছ শিকার, অনুন্নত উপক‚ল এবং পানির মান রক্ষায় অবহেলা প্রভৃতিকে কারণ বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে ৯০ শতাংশ তাপ সমুদ্র শোষণ করে নেয় এবং যার প্রভাব পড়ে প্রবাল প্রাচীরের ওপর।