ক্রীড়া ডেস্ক: বোলিং ব্যর্থতা থেকে কোনো কিছুতেই বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। গতকাল পার্লেতেও ঠিক তেমনটাই দেখা গেল টাইগার বোলারদের। সঙ্গে এদিন আবারও যোগ হয়েছিল ফিল্ডারদের ব্যর্থতা। যে সুযোগটা দুই হাত ভরে নিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও হাশিম আমলা। বলা যায় সফরকারী বোলারদের নিয়ে খেলেছেন তারা! এ দুই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে ৩৫৩ রানের পাহাড় গড়েছে স্বাগতিকরা।
চলতি সিরিজে এমনিতেই দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন হাশিম আমলা। গতকাল তার সঙ্গে নতুন করে যোগ দিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্ড। শুরুতে অবশ্য সাকিব আল হাসানের বলে সিøপে ক্যাচ দিয়েছিলেন এ ডানহাতি। কিন্তু ফিল্ডার নাসির হোসেন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার হাত থেকে বের হয়ে যায় বল। কিছুক্ষণ পর মাহমুদউল্লাহর কল্যাণে রানআউটের হাত থেকেও রক্ষা পান এবি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি তিনি। তৃতীয় উইকেটে আমলাকে নিয়ে সফরকারী বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন। সময় যত গড়িয়েছে, তার ব্যাটের ধার ততই পেয়েছে গতি। ৩৪ বলে এ ডানহাতি পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। এরপর সে ইনিংসকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেন মাত্র ৬৮ বলে। এ নিয়ে ওয়ানডেতে ২৫তম সেঞ্চুরি করেন তিনি।
এর আগে হাশিম আমলাকে নিয়ে ৮৪ বলে জুটিতে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ভিলিয়ার্স। তাদের জুটির এটি ১২তম সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি জুটির রেকর্ড এখন এককভাবে এ দুজনের। তাদের আগে গ্রায়েম স্মিথ ও হার্শেল গিবস জুটির শতরানের জুটি ছিল ১১টি।
তৃতীয় উইকেটে আমলা ও ভিলিয়ার্স মিলে ১০৮ বলে ১৩৬ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের মজবুত ভিত এনে দেন। এরপর রুবেল হোসেনের করা ৩৬তম ওভারের শেষ বলে মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আমলা (৮৫)। কিন্তু দমে যাননি ভিলিয়ার্ড। জেপি ডুমিনিকে নিয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর আরও চড়াও হন তিনি। এক পর্যায়ে তাসকিন আহমেদের টানা তিন বলে দুই ছক্কা ও এক চারে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারসেরা ১৬২ রান। এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ ডানহাতি করেছিলেন ৬৬ বলে অপরাজিত ১৬২ রান। রানসংখ্যায় এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। গতকাল রুবেল হোসেনের বলে সাজঘরে ফেরার আগে করলেন ১৭৬ রান। ১০৪ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৫ চার ও ৭ ছক্কায়।
ডি ভিলিয়ার্স আউট হওয়ার পর আর কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ওভারে পড়ে আরও দুই উইকেট। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে ৫০ ওভারে ৩৫৩ রানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ২০০৮ সালে বেনোনিতে ৩৫৮ এখনও সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের বিপক্ষে এ নিয়ে সপ্তমবার সাড়ে তিনশর বেশি রান করল কোনো দল।
বাংলাদেশের হয়ে রুবেল ৪ উইকেট নিয়েছেন ৬২ রানে। ৬০ রানে দুটি সাকিব। এদিকে ৯ ওভারে ৭১ রানে উইকেটশূন্য তাসকিন আহমেদ। ১০ ওভারে ৮২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য মাশরাফিও।