নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: খেলাপি ঋণের মামলায় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আশেকুর রহমান লস্করকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকার খেলাপি ঋণের মামলায় অর্থঋণ আদালত এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। সম্প্রতি এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। চট্টগ্রামের এই ব্যবসায়ী মেঘনা ব্যাংক লিমিটেডের একজন উদ্যোক্তা ছিলেন। মেঘনা ব্যাংকেও তিনি ১৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ঋণখেলাপি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আশেকুর রহমান ন্যাশনাল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ২০১৯ সালে ১০০ কোটি টাকা ঋণ নেন। মূলত কাগজে-কলমে থাকা গ্র্যান্ড ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের নামে তিনি এই ঋণ নিয়েছেন। ন্যাশনাল ব্যাংক কোনো প্রকার যাচাই ছাড়াই এই ঋণ দিয়েছে। কোনো জামানত রাখা হয়নি। এ পর্যন্ত ব্যাংকটির সুদাসলে মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৭৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর এ বেনামি ঋণের মামলায় আশেকুর রহমান লস্কর, তার কর্মচারী মোয়াজ্জেম হোসাইন ও সাদিকা আফরিন নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধ না করায় এবং তাদের দেশত্যাগের আশঙ্কা থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা আবেদন করে, যা আদালত মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, জাহাজ ভাঙা ব্যবসায়ী আশেকুর রহমান লস্কর ন্যাশনাল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ২০১৯ সালে ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু তিনি এই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেনি। আর তিনি ঋণ নিয়েছেন নিজের কর্মচারী মোয়াজ্জেম হোসাইনের নামে। ঋণখেলাপি হওয়ায় আর কিস্তি পরিশোধ না করায় আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
মেঘনা ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এআরএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশেকুর রহমান লস্কর ২০১৬ সালের দিকে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণখেলাপি হয়ে পড়েন। তিনি মেঘনা ব্যাংকের একজন উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি ব্যাংকের ঝুঁকি কমিটির সদস্য ছিলেন এবং এখনও ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটি সদস্য। নিজের অবস্থান কাজে লাগিয়ে কর্মচারী মোয়াজ্জেম হোসাইনকে মালিক দেখিয়ে গ্র্যান্ড ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের নামে মেঘনা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ নিয়েছেন, যা অক্টোবর পর্যন্ত পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ২৭০ টাকা ঋণ নেন। মূলত এ বেনামি ঋণের সুবিধাভোগী তিনি। আর বকেয়া পাওনা আদায়ে গত বছর মেঘনা ব্যাংকও মামলা করেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আশেকুর রহমান লস্করের মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।