নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে নেয়া পদক্ষেপের জন্য সরকারকে সাধুবাদ না জানিয়ে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে শুধু সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছে বিএনপিÑএ কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ফরিদপুরের শিবচর উপজেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছে। নেতিবাচক রাজনীতি করতে করতে এবং মিথ্যা কথা বলতে বলতে বিএনপির অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে, বজ্রপাতে মৃত্যু হলেও তার দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির শাসনামলে সড়ক যোগাযোগ খাত ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দেন এবং তার সুদক্ষ নেতৃত্বে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। এ সত্য স্বীকার করতেও বিএনপি লজ্জা পায়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মৃত্যুই বেদনার। আমরা সড়কে একটি মৃত্যুও চাই না। গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা
জ্ঞাপন করছি। শিবচরের কুতুবপুরে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটা সড়কের জন্য নয়।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং দুর্ঘটনা রোধে শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’-এর অধীনে প্রণীত বিধিমালাও কার্যকর করা হয়েছে। দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কগুলো পর্যায়ক্রমে সার্ভিস লেনসহ ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি জাতীয় মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হয়েছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পট ঝুঁকিমুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য স্পট ঝুঁকিমুক্ত করার কাজও হাতে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক মোহনাগুলো চিহ্নিত করে প্রকৌশলগত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থাপন করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় সাইন-সিগন্যাল। পণ্য পরিবহন চালকদের বিশ্রামের জন্য সিরাজগঞ্জের পাঁচিলায়, কুমিল্লার নিমসারে, হবিগঞ্জের জগদীশপুরে এবং মাগুরার লক্ষ্মীকান্দরে চারটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় নিরাপদ সড়ক করিডোর বাস্তবায়ন, পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়কে নিরাপত্তা কার্যক্রম গ্রহণ, পেশাদার ড্রাইভারদের জন্য ট্রেনিং, ভেহিকল পরিদর্শন কার্যক্রমের আধুনিকীকরণ, তিনটি হাসপাতাল (মুগদা, টাঙ্গাইল ও বগুড়া) ট্রমা সেন্টারের আধুনিকীকরণ, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ এবং ক্রাশ ডেটাবেস সিস্টেম আধুনিকীকরণ করার লক্ষ্যে বহুমাত্রিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য প্রক্রিয়াধীন।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ সব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সড়কে চালক, পরিবহন শ্রমিক ও পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গৃহীত সব পদক্ষেপের জন্য সরকারকে সাধুবাদ না জানিয়ে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে সরকারের সমালোচনা করে যাচ্ছে বিএনপি।