ব্যস্ততা বেড়েছে মীরসরাইয়ের ছাতা কারিগরদের

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : অন্য সময়ের তুলনায় বর্ষায় ব্যবহার বেড়ে যায় ছাতার। তাই বর্ষাকালে ছাতার ব্যবহার অন্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়ে যায় ছাতা কারিগরদের। বৃষ্টির কারণে উপজেলার করেরহাট, বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, মিঠাছরা, মীরসরাই, নিজামপুর, বড়তাকিয়া, আবুতোরাব বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে নষ্ট ছাতা মেরামত করতে লোকজনের ভিড় বেড়েছে। কারিগরদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। অন্য ব্যবসায়ীরা বসে অলস সময় পার করলেও ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে ছাতা মেরামতের সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় একটু বেশি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ জনসাধারণের।

বারইয়ারহাট পৌরসদরে ছাতার কারিগর হোসেন মিয়া জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে তিনি এ পেশায় জড়িত। বছরের ছয় মাস তিনি এ পেশায় থাকেন আর বাকি মাসগুলো অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি দৈনিক ১৫ থেকে ২০টি ছাতা মেরামত করেন। দৈনিক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় করেন। তবে বর্ষা মৌসুমে আমাদের ব্যস্ততা একটু বেশি থাকে। বছরে ছয় মাস আমি এ পেশায় থাকি। বাকি ছয় মাস পরের জমি বর্গাচাষ করে সংসার চালাই।’

ছাতা মেরামত করতে আসা সুরুজ মিয়া বলেন, আমি একজন দিনমজুর। আমি দিন আনি, দিন খাই। বৃষ্টি কারণে বর্তমানে আয় কম। আমার এখন নতুন ছাতা কেনা সম্ভব না। তাই ঘরে থাকা পুরোনো ছাতা মেরামত করার জন্য বাজারে নিয়ে এসেছি।’

আবুতোরাব বাজারের ভ্রাম্যমাণ ছাতা কারিগর নাইমুল ইসলাম জানান, ছাতা মেরামত করা তার পৈতৃক পেশা। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছাতা মেরামত করে থাকেন। তিনি দৈনিক প্রায় ২০-২৫টি ছাতা মেরামত করে থাকেন। তা দিয়ে বৃষ্টি মৌসুমে ভালোই চলে তার সংসার। তবে অন্য সময়ে অলস বসে থাকতে হয়।

উপজেলার কাটাছড়া গ্রামের জান্নাতুল নাঈমা বলেন, ‘আমি একজন গৃহিণী। আমার স্বামী পরের জমিতে কাজ করেন। আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এখন বৃষ্টির সময়। তাই প্রাইভেট পড়তে গেলে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ছেলেমেয়েদের জন্য ঘরে থাকা দুইটা নষ্ট ছাতা মেরামত করতে বাজারে নিয়ে এসেছি।’