Print Date & Time : 31 July 2025 Thursday 11:19 pm

ব্যাংকে জালিয়াতি রোধে ব্যবস্থা নিন

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (ডিবিবিএল) বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। বিদেশিদের সংশ্লিষ্টতা থাকায় ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকের আস্থা তৈরি হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে চার স্তরের ডেটা সেন্টার চালু করে ডিবিবিএল’কে দেশের সবচেয়ে নিরাপদ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে দাবি করা হয়। তখন ব্যাংকটি বলেছিল, ডিবিবিএল-ই দেশের একমাত্র ব্যাংক, যার দুটি স্বতন্ত্র লাইভ ডেটা সেন্টার এবং আরেকটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার রয়েছে। এটি তথ্য প্রকিয়াকরণ ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করছে, এ অবকাঠামো গ্রাহকদের নির্বিঘœ সেবার নিশ্চয়তা দেয়। প্রাকৃতিক ও আকস্মিক দুর্যোগের সময় এ পদ্ধতি তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এবং একটির কার্যক্রম ব্যাহত হলে অন্যটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হবে। পাঠকেরা লক্ষ করে থাকবেন প্রায়ই সিস্টেম আপগ্রেডের কথা বলে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। যেমন, গত ১৪ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ টানা ১০২ ঘণ্টা ব্যাংকটি সব শাখা এটিএম, পিওএস ও এজেন্ট ব্যাংকিংসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখে। কেনাকাটায় বিশেষ ছাড়ের অফার পেয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নতুন পণ্য নেক্সাস-পে ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে। এত সতর্কতা সত্ত্বেও এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বারবারই ব্যাংকটির নাম আসছে।
এ অবস্থায় গতকাল শেয়ার বিজে ‘ব্যাংককর্মী পরিচয়ে ডাচ্-বাংলার গ্রাহকের তথ্য ও টাকা চুরি’ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন সাধারণ মানুষ বিশেষ করে গ্রাহকদের হতাশ করবে।
খবরে বলা হয়, ব্যাংকের কর্মী পরিচয় দিয়ে ডাচ্-বাংলার গ্রাহকের ডেবিট কার্ডের তথ্য জেনে নেয় একটি চক্র। এরপর ওই তথ্য ব্যবহার করে নেক্সাস পে’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর করে পরে তা তুলে নেওয়া হয়। এমনকি ওই গ্রাহকের হিসাবে অন্য গ্রাহকের হিসাব থেকেও টাকা স্থানান্তর করে আনা হয়। পরে সেই টাকাও তুলে নেয় চক্রটি। এ নিয়ে টাকা-খোয়ানো গ্রাহকরাও পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। অন্যদিকে গ্রাহকের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে ব্যাংকটি।
আমরা মনে করি, গ্রাহকের হিসাবে জমা থাকা অর্থের ক্ষেত্রেই নয়, গ্রাহকের তথ্যের সুরক্ষা দেওয়াও ব্যাংকের দায়িত্ব। ডিবিবিএল এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আগে জালিয়াতিতে শুধু এটিএম বুথের নাম আসত, এখন ব্যাংকটির নামও আসছে। এর দায় এড়াতে পারে না ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। তাদের নেওয়া ব্যবস্থা গ্রাহকের আমানত ও তথ্যের নিরাপত্তা বিধান করতে পারেনি। এ নিয়ে সময়ক্ষেপণে গ্রাহকদের ক্ষতি বাড়বে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা।