নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকে একই পরিবারের চারজনকে পরিচালক নিয়োগ এবং একটানা ৯ বছর পরিচালক পদে থাকার বিধান রেখেই ‘ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) বিল, ২০১৭’ পাসের সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সংসদীয় কমিটির এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আজ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে। এ অধিবেশনেই বিলটি পাস হতে পারে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সেদিন বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। তা নাকচ করে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
বিলটি নিয়ে সংসদীয় কমিটি গতকাল ও এর আগে ২৯ অক্টোবর আলোচনা করেছিল। কোনো ধরনের সংশোধনী ছাড়াই গতকাল তা পাস করে কমিটি।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে বলেন, তারা বিলটি পাস করে দিয়েছেন। কোনো ধরনের পরিবর্তন তাতে আনা হয়নি। আজ বুধবার কমিটির প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
বিদ্যমান আইনে ধারাবাহিকভাবে দুই মেয়াদে পরিচালক পদে সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত থাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যাংক মালিকদের দাবির মুখে এখন তা সর্বোচ্চ একটানা ৯ বছর করা হচ্ছে। যদিও তাদের প্রস্তাব ছিল পরিচালকরা যাতে আজীবনের জন্য পদে থাকতে পারেন। এছাড়া একই পরিবারের দুজন সদস্য আগে পরিচালনা পর্ষদে (বোর্ড) থাকতে পারতেন। এক্ষেত্রে দ্বিগুণ করা হয়েছে এ সংখ্যা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০১৭’র খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংশোধনী আইনে নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলে তিন বছর গ্যাপ দিয়ে আবারও পরবর্তী ৯ বছরের জন্য ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচিত হতে পারবেন। এভাবে আমৃত্যু ব্যাংক পরিচালক থাকতেও আইনে কোনো বাধা নেই।
বিদ্যমান আইনের ১৫(৪) ধারা অনুযায়ী সাধারণ সভায় পরিচালকরা নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রতিনিধিত্বকারী ও স্বতন্ত্র পরিচালকরা সাধারণ সভায় নির্বাচিত হন না। এতদিন বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোকে পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনয়নের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হতো। সংশোধিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছেÑপরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাচন বা মনোনয়নের পর তাকে নিয়োগ দেওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। পরিচালক পদে সরকার কাউকে মনোনয়ন দিলে তার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কোনো ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে কাউকে নির্বাচিত বা মনোনীত করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তা অনুমোদন না দিলে সে নিয়োগ হবে না।